ঢাকা: নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আটক বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে ১৮ দলের ডাকা টানা ৮৪ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল অনেকটা ফাঁকা।

ব্যাংকগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও গ্রাহক ও লেনদেন কম। যারা ব্যাংকে এসেছে তারাও রয়েছেন আতঙ্কে।

রোববার সকাল ১০ থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সোনালী ব্যাংকে টাকা তুলতে আসা এক গ্রাহক বরকত আলী বলেন, হরতালে যেভাবে বোমা হামলা হচ্ছে তাতে আমরা কেউ নিরাপদ নই। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশের কেউ নিরাপদে আছে কি? আপনার সাথে কথা বলছি এখানেও নিরাপদ নই। কোথায় বোমা হামলা হয় তা কেউ বলতে পারে না।

আরেক গ্রাহক নাজমা খাতুন বলেন, হরতালে ঘর থেকে বের হলে সবসময় ভয়ে থাকি। তারপরও বের হতে হয় পেটের তাগিদে। হরতাল যারা ডাকে আর যাদের বিপক্ষে ডাকে তাদেরই লাভ, আমাদের মতো সাধারণ পাবলিকের কোনো লাভ নেই। হরতালে ভাঙচুর হবে, গাড়ি পোড়াবে, মানুষ মারবে। যারা হরতাল ডাকে তাদের কোনো ক্ষতি হবে না। ক্ষতি হবে আমাদের।

ফুটপাতের ব্যবসায়ী সিরাজুল বললেন তার টানাটানির সংসারের কথা। ক্ষুদ্র এ ব্যবসার সামান্য আয় দিয়ে কোনো রকমে চলে তার পরিবার। সারাদিন ব্যবসা করে অন্য খরচ বাদ দিয়ে চার/পাঁচশ টাকা থাকে।

তিনি বলেন, হরতালে ঠিকমত ব্যবসা করতে পারি না। আজকে এখনো ব্যবসা শুরু করতে পারিনি। ব্যবসা করতে না পারলে সংসারের চলবে না।

হরতাল চলাকালে মতিঝিলে যান চলাচল করছে তুলনামূলক কম। রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, কমলাপুর, ফকিরাপুল এলাকার সড়ক ছিল প্রায় ফাঁকা।

এসব এলাকায় রাস্তার মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বেশি দেখা গেছে। রায়ট কার (পুলিশের সাঁজোয়া যান), জলকামান নিয়ে রাস্তায় টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকের পুলিশও মাঠে দেখা গেছে।

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে লেনদেন কম হচ্ছে। বড় কোনো লেনদেন হচ্ছে না। গ্রাহকরা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া টাকা তুলছে না।

হরতাল প্রসঙ্গে মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের প্রাধান কার্যালয়ের জেনারেল ম্যানেজার মো. শওকত আলী একই কথা জানালেন। তিনি বলেন, হরতালে কর্মকর্তা কর্মচারীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও লেনদেন ও গ্রাহক উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। যেভাবে হরতালের আগের দিন ও হরতালে বোমা ফাটানো হচ্ছে তাতে গ্রাহকরা বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া আসছে না।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here