বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের উদ্বোধনস্টাফ রিপোর্টার :: আজ রবিবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন চত্ত্বরে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে “বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস ২০১৭” এর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফ-এর বাংলাদেশস’ প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বিগবেডার ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সুধীর কুমার ঘোষ।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের নেতৃত্বে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বেসরকারী সংস্থা, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সকলের সহযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস – ২০১৭’ উদযাপনের কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।

এ কর্মসূচী কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এবং বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জাতিসংঘের আহ্বানে ২০০৮ সাল হতে প্রতি বছর ১৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। এ বছরের বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের প্রতিপাদ্য “আমাদের হাত, আমাদের ভবিষ্যত”। হাত ধোয়া এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা শুধুমাত্র আমাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষাই করেনা বরং ভবিষ্যত এবং সামাজিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের উদ্বোধনউদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার সচিব বলেন, বাংলাদেশের মত একটি জনবহুল দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রগতিতে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা খুবই গুরত্বপূর্ণ ও বিশাল চ্যালেঞ্জ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামগ্রিক বাস্তবতা ও অন্তরায়সমূহ গভীরভাবে উপলব্ধি করে এ অঙ্গীকার ঘোষণা করেছিলেন। তিনি অনুধাবন করেছিলেন উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলেই কেবল সার্বিক জনস্বাস্থ্যের কাঙ্খিত উন্নতি ঘটানো সম্ভব। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রত্যেকটি গ্রামে ৫০ টিরও বেশি নলকূপ রয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের হার শতকরা ৯৯ ভাগ।

সচিব বলেন, বিশ্বে প্রতিবছর পঁয়ত্রিশ লক্ষের বেশি শিশু শুধুমাত্র ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ বছরের আগেই মৃত্যুবরণ করে। সাশ্রয়ী পন্থা- সাবান দিয়ে দুহাত ধোয়ার অভ্যাস অনুশীলন করার মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুকরণ করে লক্ষ লক্ষ শিশুর জীবন রক্ষা করা সম্ভব। এই দিবস উদযাপনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হাত ধোয়া কার্যক্রম সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। শিক্ষক ও অভিভাবকগণ এ কাজে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করবেন বলে আমরা আশা করি।

বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের উদ্বোধনসভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’-এর লক্ষ্যমাত্রা ৬.২ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সকলের জন্য সমতা ও পর্যাপ্ততার ভিত্তিতে স্যানিটেশন ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যার সুযোগ সৃষ্টি করাসহ খোলা জায়গায় মলত্যাগ নির্মূল করা এবং নারী ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিসি’তিতে বিদ্যমান জনগোষ্ঠির স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য পরিচর্যার উপর বাংলাদেশ সরকার বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উদ্‌যাপন এ লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখবে।

ইউনিসেফ (বাংলাদেশ)-এর প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বিগবেডার বলেন, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনে উন্নয়নশীল দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। ইউনিসেফ স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন কার্যক্রমে বাংলাদেশের পাশে থেকে সবসময় কাজ করবে।

এর আগে সকাল ০৯টায় একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শিক্ষা ভবন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হয় এবং আলোচনা পর্ব শেষে সকাল ১০.৩০ টায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, এনজিও এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীর অংশগ্রহণে হাত ধোয়া কার্যক্রমের মাধ্যমে “বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস-২০১৭” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here