বিশ্বের ১'শ ব্যক্তির মধ্যে প্রতিমন্ত্রী পলককে রাজনীতিবিদ ক্যাটাগরিতে মূল্যায়ন

নজরুল ইসলাম তোফা :: বাংলাদেশের সাংবিধানিক নামের এইদেশ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। এমন এই দেশ সুুুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা, মাছে-ভাতের নদী মাতৃক দেশ। এমন দেশের সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। সুতরাং এমন এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যেই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার উঠে পড়েই লেগেছে। বলতে বাধা নেই এই দেশ, একটি উন্নয়নশীল দেশ। এইদেশে শিক্ষার হার উন্নত দেশের তুলনায় কম বলা চলে। দেখা যায় স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেলেও শিক্ষার মানের উন্নয়ন ঘটেনি সেই হারে। আবার মানুষের জীবন যাপনের ব্যাপক পরিবর্তনও ঘটেছে। সাথে সাথে রুচিবোধের পাশা পাশি সামাজিক রীতিনীতি, কৃষ্টি কালচারের চর্চাটাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই এই দেশের সরকার বৃহৎ একটি স্বপ্ন কিংবা আশা আকাঙ্ক্ষার আলোকে সমাজ পরিচালিত করছে। বাংলাদেশকে নিয়ে সুচিন্তিত পরিকল্পনায় আওয়ামী লীগ সরকার বিরাট এক পরিবর্তন আর ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়েই এগিয়ে চলছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ নামক একটি প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

বর্তমান সরকার ডিজিটাল কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তির সুফল পাওয়ার লক্ষ্যেই নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগ সরকার মহাকাশে খুব গুরুত্বপূর্ণ এক সফল নির্মাণ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। তবে জানা দরকার মহাকাশে বিভিন্ন প্রকার স্যাটেলাইট রয়েছে। এই গুলোর মধ্যে- ‘আবহাওয়া স্যাটেলাইট,’ ‘পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইট,’ ‘ন্যাভিগেশন স্যাটেলাইট’। তাছাড়া বিএস-ওয়ান স্যাটেলাইট হচ্ছে যোগাযোগ ও সম্প্রচার স্যাটেলাইট।

“বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট” এর কাজ মুলত টিভি চ্যানেল গুলোর স্যাটেলাইট সেবা নিশ্চিত করা। এমন এই স্যাটেলাইটের সাহায্যে চালু করা যাবে ডিটিএইচ বা ডিরেক্ট টু হোম ডিশ সার্ভিস। তাছাড়াও এই ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ যেসব জায়গায় অপটিক কেবল কিংবা সাবমেরিন কেবল পৌঁছায়নি সে সব জায়গায় এমন স্যাটেলাইটের সাহায্যে নিশ্চিত ভাবেই তা পৌঁছাবে।আরও পারে ইন্টারনেট সংযোগ।

সুতরাং আওয়ামী লীগ সরকার স্যাটেলাইটের সুফল পৌঁছে দিতে যেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের দোরগোড়ায় অনেকে কাজ করছে। তাদেরই মধ্যে ‘’সবচেয়ে প্রভাবশালী’’ ও “কর্মদক্ষ” ১০০ জন ব্যক্তির নামের এক তালিকা “আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক অ্যাপলিটিক্যাল” প্রকাশ করেছে। এমন এই তালিকায় উল্লেখ যোগ্য ব্যক্তির মধ্যেই ‘অস্ট্রেলিয়ার প্রধান মন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল,’ ‘ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা-আকুফো আদো’ ও ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের প্রতিষ্ঠাতা টিম বারনার্সলি’র সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রতিমন্ত্রী ‘জুনাইদ আহমেদ পলক’ এর নামও স্থান পেয়েছে।

একুশ শতকে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েই শেখ হাসিনা ছয় জানুয়ারি ২০০৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় বারের মতো শপথ নিয়েছিলেন। সুতরাং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের বছরে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ ও তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণই ছিল সরকারের মূল নির্বাচনী ইশতেহার। তাই সরকার চ্যালেঞ্জ নিয়েই যেন দিনে দিনে তথ্য প্রযুক্তির অনেক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনে সক্ষম।

পলকের চৌকস কর্মদক্ষতা অ্যাপলিটিক্যালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা “রবিন স্কট” বলেছেন, ‘বিশ্বের নানা প্রান্তে যারা ডিজিটাল গভার্নেন্স প্রতিষ্ঠায় রত তারা নিরলস ভাবেই কাজ করছে, তাদের খুঁজে পেরেছি এটা অনেক আনন্দের বিষয়। এমন এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিগণ স্ব স্ব ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন। তাঁরা জ্ঞানের আলোকে সারাবিশ্ব সহ বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছায়ে দিচ্ছে এবং বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির কাজ করছে।

এই প্রযুক্তির ঝুঁকি কমানোর অনেক চেষ্টাও করছেন।’ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমন এই উদ্যোগের আলোকে বলা যায়, ১২ ডিসেম্বর, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ এর নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা ছিল ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হবে। একটি উন্নত দেশ হবে, সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল সমাজ হবে, এমন ডিজিটাল যুগের জন সাধারণ অনেকাংশেই যেন সফলতার দ্বার প্রান্তেই পৌঁছাবে, রূপান্তরিত অনেক উৎপাদন ব্যবস্থা চালু হবে, নতুন নতুন জ্ঞানভিত্তিক সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সমন্বয়ে একটি জ্ঞান ভিত্তিক সমাজের স্বপ্নেই বিভর ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তাই শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ১মবারের মতো ‘’ওয়ার্ল্ডস হান্ড্রেড মোস্ট ইনফ্লুয়েনশিয়াল পিপল ইন ডিজিটাল গভার্নমেন্ট’’- শীর্ষক তালিকায় প্রতিমন্ত্রী পলকের নাম এসেছে ‘রাজনীতিবিদ’ ক্যাটাগরিতে।সুতরাং তাঁদের প্রধান এই বিষয়ের কাজও ত্বরান্বিত হচ্ছে।

পলকের চৌকস কর্মদক্ষতা আসলেই এমন এই উদ্যোগের ডিজিটাল বাংলাদেশ সত্যিই বিশ্বের জ্ঞানভিত্তিক সমাজের সঙ্গে মিলিয়েই বাংলার জনগোষ্ঠীকে উপহার দেওয়া খুব প্রয়োজন বৈকি। আমাদের দামাল ছেলেরা অনেক রক্ত দিয়ে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আজকের এই বাংলাদেশ পেয়েছে। আজ আমরা তিল তিল করেই দাঁড়াতে শিখছি। তাই বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের সোনার ছেলেরা হাতের নাগালে পেয়ে যাবে অনেক আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ। তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর উন্নয়নশীল দেশ ও সমৃদ্ধশালী নতুন জীবন।

‘বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি’ ২০০৯ সালের ১৭ থেকে ১২ নভেম্বরে “ডিজিটাল বাংলাদেশ সামিট” নামক এ বিষয়ে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল, যাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো আলোচিত হয়। প্রচলিত শিক্ষা ও সংস্কৃতিতেও আমূল পরিবর্তন এনেই তথ্য প্রযুক্তির সমন্বয় করতে হবে। আর না পারলেই যেন ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মের কর্ম সংস্থান নিয়ে খুব বড় ধরনের জটিলতায় পড়তে হবে। এমন একথা গুলো বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তির মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ডিজিটাল বাংলার এই তথ্য প্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা থেকে মন্ত্রিত্ব পাওয়া এমন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় বেকার তৈরির কারখানা।

আসলেইতো এই প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রকৃত পক্ষে সামনের দিন গুলোতে তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা অসম্ভব হবে। কারণ, বর্তমানে দেখা যায় যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পাঠ্যক্রম, পাঠদান পদ্ধতি এবং শিক্ষক সহ শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। সুুতরাং এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অভিযাত্রাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সঠিক সময়েই’ মোস্তাফা জব্বারকে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক

এদিকে আবার “তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ” থেকে পাঠানো একটি বিবৃতিতে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তাঁর সুযোগ্য সন্তান মাননীয় আইসিটি উপদেষ্টা জনাব, সজীব ওয়াজেদ জয় এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে দেশীয় “ডিজিটাল বাংলাদেশ” নির্মাণের অভিযাত্রায় ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তনে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই এক অনবদ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে এটি তার বৈশ্বিক স্বীকৃতি।”

ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তাঁর অবদান আসলেই অনেক উল্লেখযোগ্য।বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে তিনি বয়সের বিবেচনায় সবচেয়ে তরুণ। পলক আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছে ২০১৪ সাল থেকে। ২০১৬ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার্স’ তালিকাতেও পলকের নাম আসে। হয়তো বা তাঁর চৌকস ও সুদক্ষ কর্মদক্ষতায় তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞানের আলোকেই গড়ে উঠবে “ডিজিটাল সোনার বাংলাদেশ।”

 

লেখক: টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক। nazrulislamtohfanit@gmail.com

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here