নবীগঞ্জের বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডে নতুন দু‘টি প্যাডসহ ৪টি প্যাডে চাকুরী দেওয়ার নাম করে কতিপয় দালালচক্র বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিন ঐ এলাকার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে চাকুরী দেওয়ার নামে বায়োডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের নামে বায়োডাটার সাথে বড় অংকের টাকা লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত একমাসে আউশকান্দি বাজার সংলগ্ন জোয়াল ভাঙ্গা হাওরে নতুন প্যাডে চাকুরীর জন্য আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে অনত্মতপড়্গে ৫ হাজার বায়োডাটা জামা পড়েছে। এছাড়া ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের কয়েকটি ঠিকানাধারী প্রতিষ্ঠান ও কয়েক হাজার বায়োডাটা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে করিমপুর গ্রামের আব্দুল আহাদ ভান্ডারী নামে এক ব্যক্তি নবীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকশ লোকের বায়োডাটার সাথে জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম গ্যাসফিল্ড বিবিয়ানা গ্যাস জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন বৃদ্ধি করার জন্য নতুন করে আউশকান্দি এবং ইনাতগঞ্জের বক্তারপুরে নতুন আরো দু‘টি প্যাড নির্মাণ করা হচ্ছে। ঐ প্যাড দুটি নির্মাণের জন্য শ্রমিক নিয়োগের নাম করে ইউনিয়ন অফিস থেকে শুরম্ন করে ক্ষতিপয় দালাল চক্র বায়োটাডা সংগ্রহের কাজ শুরম্ন করে।

এছাড়া বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে চাকুরী দেওয়ার নাম করে নবীগঞ্জের করিমপুর গ্রামের আব্দুল আহাদ ভান্ডারী আউশকান্দি অঞ্চল সহ নবীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে বায়োডাটা সংগ্রহ করেন। তিনি বায়োডাটা প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা নগদ গ্রহণ করেন। স্থানীয় লোকজন চাকুরীর জন্য ৫নং আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বায়োডাটা জমা নেওয়া হচ্ছে।

ঐ ইউনিয়ন পরিষদের কাছে প্রায় ৫ হাজার বায়োডাটা জমা পড়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে কোন বায়োডাটা জমা না পড়লেও বিভিন্ন ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার দরখাসত্ম- জমা পড়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এসব চাকুরী প্রার্থীরা শেষ পর্যনত্ম চাকুরী না পেলে প্রতারিত হয়ে এর প্রতিফল হিসেবে ক্ষোভের বিষ্ফোরণ ঘটে বড় ধরনের সংঘাতের আংশকা রয়েছে।

করিমপুর গ্রামের আব্দুল আহাদ ভান্ডারী বলেন, আমি চাকুরী দেওয়ার ক্ষমতা রাখি এজন্য বায়োডাটা সঙগ্রহ করেছি। এছাড়াও কিছু লোকজন আমাকে অবিশ্বাস করায় ষ্টাম্পের উপর স্বাক্ষর করে টাকা এবং বায়োডাটা নিয়েছি। ইনশালস্নাহ তাদের চাকুরী হবে। এসকল বিষয়ে ৫নং আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিলাওর হোসেন বলেন তিনি চাকুরী দেওয়ার জন্য বায়োডাটা জমা নিচ্ছেন ঠিকই তবে কোন টাকা পয়সা জমা নিচ্ছে না।

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জেলা প্রশাসক ও শেভরনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতেই আমি বায়োডাটা সঙগ্রহ করছি।

ইনাতগঞ্জ  ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন বলেন বিবিয়ানায় চাকুরী দেওয়ার জন্য আমি কোন বায়োডাটা সংগ্রহ করিনী। তবে, আমার ইউনিয়নের কিছু লোক এ রকম বায়োডাটা সংগ্রহ করছে বলে শুনছি। ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালিক মিয়া বলেন আমার বিবিয়ানায় চাকুরী দেওয়ার ক্ষমতাও নেই তাই বায়োডাটা সংগ্রহ করিনী। কিছু দালাল চক্র এসব করছে বলে শুনা যাচ্ছে।

এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মাহমুদ হাসান বলেন, বায়োডাটা সংগ্রহ এবং চাকুরী দেওয়ার জন্য যদি কেউ টাকা পয়সা নেয় তাদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাকুরী দেওয়ার মালিক বিবিয়ানা কর্তৃপক্ষ। কোন চেয়ারম্যান যদি বায়োডাটা সংগ্রহ করে থাকে তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে তাদের সাথে কথা বলব।

এব্যাপারে বিবিয়ানার দায়িত্বে নিয়োজিত শেভরন বাংলাদেশের কমিউনিকেশন অফিসার আহসান উলস্নাহ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কোন চেয়ারম্যান বা ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান যদি বায়োডাটা সংগ্রহ করে থাকে এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে বিবিয়ানার পক্ষ থেকে কাউকে বায়োডাটা সংগ্রহ করা অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/এম এ আর শায়েল/হবিগঞ্জ

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here