বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তার পানি

ডেস্ক রিপোর্টঃঃ  টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার অতিক্রম করেছে। ফলে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী এলাকার লোকজন বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন।

সোমবার (২০ জুন) দুপুর ১২টা থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেমি)  বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিন্টার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সোমবার ভোর থেকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচে থাকলেও সকাল ৯টার পর থেকেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষ এবার বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন।

তিস্তাপাড়ের মানুষরা জানায়, প্রতি বছর জুন/জুলাই মাসে উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এবারও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় তিস্তা তৃতীয় ধাপে আবারো ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। হেঁটে পাড়ি দেওয়া তিস্তায় চলতে শুরু করেছে নৌকা। হাঁকডাক বেড়েছে মাঝিদের। কর্মব্যস্থতা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের জেলে পরিবারে।

এদিকে পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা তীরবর্তী ৫ উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

হঠাৎ তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাড়ের মানুষ বড় বন্যার আশঙ্কা করলেও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, তিস্তায় বড় ধরনের বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউয়ের ফলে পানির প্রবাহ বেড়েছে। ভারতে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। তাই ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ কমে যাবে বলে দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখা। পলি ও বালু জমে তিস্তা ভরাট হওয়ায় সামান্য পানির প্রবাহ লোকালয়ে ঢুকে বন্যার সৃষ্টি করে। তবে আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম বলেন, প্রতি বছর তিস্তার পানির কারণে এ জেলার লোকজন ক্ষতির মুখে পড়েন। জেলা প্রশাসন পানিবন্দি পরিবারের তালিকা করতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদকে বলেছে। তালিকা পেলে বরাদ্ধ নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করা হবে। তাই তিস্তাপাড়ের মানুষের এ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানির প্রবাহ রাত থেকে বাড়তে থাকে। ব্যারাজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতে পানির প্রবাহ কমে গেলে তিস্তার পানি কমে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here