bnp201602সিন্ডিকেটের কবল থেকে বেরিয়ে নতুন বিএনপিকে দেখা যাবে দলটির ষষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে। অতীতের সব আন্দােলনের ব্যর্থতার গ্লানি মুছতে যেকােনো মূল্যে নতুন কমিটির মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে কাউন্সিল নিয়ে দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাদের রূপরেখা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত লক্ষ্য করা গেছে। তবে বেশিরভাগ নেতাকর্মীর প্রত্যাশা কাউন্সিলের মাধ্যমে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে কাউন্সিল হলেও ঐতিহ্যগত কারণেই পদাধিকার বলে বর্তমান চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াই দলটির চেয়ারপারসন থাকবেন। এবং তারেক রহমানকে কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিচারপতি টি এইচ খানকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।

দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মহাসচিব পদে গত কয়েকমাস ধরেই একাধিক নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দিকেই হাইকমান্ডের দৃষ্টি রয়েছে।

এছাড়া মহাসচিব পদে যারা আলোচনায় রয়েছেন তাদের কারো নামে রয়েছে সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগ, কারো নামে রয়েছে সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগও। এ পদে আলোচিত অধিকাংশ নেতাই স্বাস্থ্যগত জটিল রোগে ভুগছেন।

এদিকে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি থেকে কয়েকজনকে উপদেষ্টা কমিটিতে দেয়ার দাবি রয়েছে দলটিতে। এ তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, এম কে আনোয়ার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, বেগম সরোয়ারি রহমান এবং এম শামসুল ইসলাম।

স্থায়ী কমিটির নতুন মুখের আলোচনায় রয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, বেগম সেলিমা রহমান, সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ, সাদেক হোসেন খোকা, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আমির খসরু মাহামুদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এম ওসমান ফারুক, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাবুব হোসেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ (শিলং সালাহ উদ্দিন) এবং গিয়াস কাদের চৌধুরী।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে নতুন মুখের আলোচনায় শোনা যাচ্ছে মো. শাজাহান, ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর, অধ্যাপক এম এ মান্নান, মেজর (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, জয়নুল আবেদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, বরকত উল্লাহ বুলু, আ ন ম এহাসনুল হক মিলন, ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, বেগম খালেদা রব্বানী, নূরে আরা সাফা সম্পাদকীয় পদে, কাজী আসাদুজ্জামান, কবির মুরাদ, মনিরুল হক চৌধুরী, এবং হাবিুবুল ইসলাম হাবিবের নাম।

ষষ্ঠ কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটির উপদেষ্টা হতে পারেন অধ্যাপক ড. এমজাউদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফরুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর। মহাসচিব, স্থায়ী কমিটি এবং সিনিয়র যুগ্ম মাহসচিব পদে অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ আলোচনায় থাকলেও অনেকে মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব (দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) পদেই রাখা হবে রিজভী আহমেদকে।

এছাড়া যুগ্ম মহাসচিব পদে আলোচনায় রয়েছেন শিরিন সুলতানা, ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খোন্দকার, মজিবুর রহমান সরোয়ার, নিঁখোজ এম ইলিয়াস আলী, মজিবুর রহমান সরোয়ার, আসাদুল হাবিব দুলু, খায়রুল কবীর খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব এবং  হাবিব উন নবী খান সোহেল।

সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রাখা হতে পারে নাদিম মোস্তফা, নাজিম উদ্দিন আলম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রুহুল কুদ্দুস তালকুদার দুলু, ব্যারিস্টার নাসির উািদ্দন আহমেদ অসীম, আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকা, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান রাজন, ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবনকে।

নেতাদের স্ত্রী-পুত্র আত্মীয়দের মধ্যে, তাহসীনা রুশদি লুনা, আফরোজা আব্বাস, তাবিথ এম আউয়াল, ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী রয়েছেন আলোচনায় রয়েছেন।

ছাত্রনেতাদের মধ্য থেকে সানাউল হক নীরু, কামরুজ্জামান রতন, নুরুল ইসলাম নয়ন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ওবায়দুল হক নাসির, হাসান মামুন, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, হায়দার আলী লেলিন, আব্দুল মতিন, ওমর ফারুক শাহীন, আবু বকর, দুলাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম রাসেল, শেখ মোহাম্মদ শামীম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, কামাল আনোয়ার আহমেদ, আনোয়ার হোসেন টিপু, মনিরা আক্তার রিক্তা এবং সেলিনা সুলতানা নিশিতার নাম বিএনপির নতুন নির্বাহী কমিটির আলোচনায় পাওয়া গেছে।

যুবদল নেতাদের মধ্যে মূল দলে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন সাইফুল ইসলাম নীরব, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক, মোরতাজুল করিম বাদরু, হামিদুর রহমান হামিদ, মামুন হাসান, রফিকুল আলম মজনু, এস এম জাহাঙ্গীর, ফরহাদ হোসেন আজাদ, নেওয়াজ আলী, এ ওয়াই এম খলিল, আলবাট পি কস্টা এবং কাজী রফিক।

স্বেচ্ছাসেবক দলের মধ্যে বিএনপিতে আসার আলোচনায় রয়েছেন মুহাম্মদ মুনির হোসেন, আলী রেজাউর রহমান রিপন, সাইফুল ইসলাম পটু, ইয়াসিন আলী, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, হাজী মনির।

কৃষকদলের মধ্য থেকে এম এ তাহের, জামাল উদ্দিন খান মিলন, ফজলুল হক মিলন, আলহাজ একেএম মোয়াজ্জেম হোসেন, আলহাজ্ব নাজিম উদ্দিন, মো. শাজাহান মিয়া সম্রাট, ইলিয়াস আহমেদ পাল, মনিরুজ্জামান মনির, নাসির হায়দার, এবং এস কে সাদী আলোচনায় রয়েছে।

জাসাস থেকে শাইরুল কবির খান, বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকা শাহারিয়া ইসলাম শায়লা, খল অভিনেত্রী রিনা খান, শামসুদ্দিন দিদার, কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, অভিনেতা হেলাল খান, অভিনেতা বাবুল আহমেদ এবং জাহাঙ্গীর শিকদার। শ্রমিক দলসহ অন্যান্য সহযোগী সমমনা সংগঠন থেকেও বিএনপিতে দেখা যেতে পারে নতুন মুখ।

এছাড়াও ইউনুস মৃধা, কাউন্সিলর হারুন, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, সাবেক ফুটবলার আমিনুল ইসলাম কণ্ঠ শিল্পী রুমানা ইসলাম কনক চাপা, ন্যান্সির নাম আলোচনা হচ্ছে বিএনপির নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘিরে।

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দফতরে যুক্ত হতে পারেন বেলাল আহমেদ, গুলশানে চেয়ারপারসনের দফতরে সাবেক ছাত্র নেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল। রাশেদা আক্তার হীরা, হেলেন জেরিন খান, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আক্তার, রেহেনা আক্তার রানু, শ্যামা ওবায়েদ ব্যারিস্টার নওশার জামিরসহ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন।

শিরিন সুলতানা মহিলাবিষয়ক সম্পাদক পদেই বেশি আলোচিত হচ্ছেন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রচার সম্পাদক পদে। ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক পদে আজিজুল বারী হেলাল।

কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেয়ার জন্য তৃণমূলের দাবি রয়েছেন উকিল আব্দুস সাত্তার, মেজর (অব.) মাহামুদুল হাসান, মোশাররফ হোসেন, মুশফিকুর রহমান, এ এস এম আব্দুল হালিম, জহুরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার মুহাম্মাদ হায়দার আলী, খন্দকার শহিদুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন (অব.) সুজা উদ্দিন, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, লুৎফর রহমান খান আজাদ, সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম, আফজাল এইচ খান, লে. কর্ণেল (অব.) এম এ আব্দুল লতিফ খান, মেজর (অব.) ডা. মো. শাজাহান মিলন, মেজর (অব.) ডা. মুহাম্মদ রেজাউল হক, বেগম রোজী কবির, এস এ কে একরামুজ্জামান, শরীফ শাহ কামাল তাজ, রায়হান আমিন রনি এবং শাকিল ওয়াহেদ সুমন ছাড়াও নিস্ক্রিয় বিতর্কিতদেরকে।

এছাড়াও দলে নতুন করে যুক্ত হতে পারেন কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জেড এ খান, সাবেক সচিব মোফাজ্জল করীম, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর, সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার তালুকদার, সাবেক মন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ আবুল হোাসাইন, সাবেক হুইপ সৈয়দ শহীদুল হক জামাল, সাবেক এমপি আবু হেনা, সাবেক দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, সাবেক তথ্য গবেষণা সম্পাদক জহির উদ্দিন স্বপন, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজির হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এম এইচ খান মঞ্জু, সাকেক এমপি সাখাওয়াত হোসেন বকুল, চাঁদপুরের সাবেক জেলা সভাপতি এস এ সুলতান টিটু, বরগুনার সাবেক জেলা সভাপতি নুরুল ইসলাম মণি, সাবেক এমপি শামীম কায়সার লিঙ্কন, বগুরার সাবেক এমপি ডা. জিয়াউল হক মোল্লা ও এজিএম সিরাজ, সাবেক এমপি এম এম শাহীন, সাবেক হুইপ খলিলুর রহমান, সাবেক এমপি দেলোয়ার হোসেন দুলু, সাবেক এমপি শহীদুজ্জামান, সাবেক এমপি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, সাবেক এমপি প্রকৌশলী ফজলুল অজিম, সাবেক হুইপ আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান, সাবেক আব্দুল আব্বাসী, মেহেরপুরের সাবেক এমপি আব্দুল গনি, সাবেক সচিব আব্দুল হাকিম, সাবেক এমপি আতাউর রহমান আঙ্গুর, সুরঞ্জন ঘোষণ, সাবেক ছাত্র নেতা মনির হোসেন। এর মধ্যে অল্প কয়েকজনের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে।

এদিকে এক নেতার এক পদ রাখার ফর্মুলা বাস্তবায়ন হলে পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বেশ কিছু নেতাকে কেন্দ্রীয় পদ ছেড়ে জেলায় স্থানান্তর করা হতে পারে।

বিএনপির সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা মনে করেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল থেকে ১৫/২০ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে সম্পাদকদীয় পদে যোগ্য রয়েছে।

জাগো নিউজকে সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, বাস্তবতার কারণেই কমিটির আকার কেমন হবে তা বলা মুশকিল। কেউ এটা বলতেও পারবেন না।

চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো দল যেখানে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছে সেখানে কেবলমাত্র কমিটি গঠন কেন সব ক্ষেত্রেই বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

অবশ্য দলটির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ মনে করেন, হাই কমান্ড আমাকে যেখানে রাখে এতেই আমার সিদ্ধান্ত হবে। আমি সন্তুষ্ট থাকবো। তবে কমিটির আকার সম্পর্কে তিনি এই মুহূর্তে ধারণা দিতে পারছেন না বলেও জানান।

পদপদবী পাওয়ার ক্ষেত্রে বাইরের কোনো প্রভাব থাকে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

কাউন্সিলে নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী আহমেদ বলেন, যোগ্যরা তাদের স্থানে যাবেন, আর অযোগ্যরা বাদ যাবেন। আশা করছি ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথার্থ মূল্যায়ন হবে।

নতুন কমিটির আকার কেমন হতে পারে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্তমানের চেয়ে কমতে পারে। আমি মনে করি ২৫০ হওয়া উচিত।

কমিটির আকার সম্পর্কে রুহুল কবির রিজভীর মতো একই মতামত ব্যক্ত করেছেন সাবেক সেনা প্রধান ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে জে অব মাহবুবুর রহমান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here