ডেস্ক রিপোর্ট : : উঁচু দেয়ালে ঘেরা গ্রামের বাড়ি। সবুজ ছায়াঘেরা নিরিবিলি পরিবেশ। এর মধ্যেই গড়ে উঠেছিল অস্ত্র তৈরির কারখানা। খেলনা পিস্তলের রেপ্লিকা দেখে তৈরি করা হচ্ছিল আসল পিস্তল ও ওয়ান শুটারগান। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছিল নকল ওষুধ। গতকাল সোমবার পাবনা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পাবনার বেড়া উপজেলার নাটিয়াবাড়ি গ্রামে অভিযান চালিয়ে এমনই একটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে।

কারখানাটিতে অভিযান চালিয়ে একটি পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটারগানসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাড়িটি থেকে অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা কার্যালয়ে পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কারখানাটিতে অস্ত্রের পাশাপাশি নকল ওষুধ তৈরি হওয়ার আলামত মিলেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

আটক দুই ব্যক্তি হলেন আবদুল্লাহ আল মনসুর ওরফে মিঠু (৪১) ও আবদুল্লাহ আল সিয়াম (১৯)। তাঁদের বাড়ি নাটিয়াবাড়ি গ্রামেই।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, বাড়িটির মালিকের নাম আলম হোসেন। সাত থেকে আটজনের একটি চক্র বেশ কিছুদিন ধরে বাড়িটিতে অবৈধ অস্ত্র তৈরি করছিল। তারা খেলনা পিস্তলের রেপ্লিকা দেখে হুবহু আসল পিস্তল তৈরি করত। পরে তা বিক্রি করত। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা বেশ কিছুদিন ধরে বাড়িটি নজরদারিতে রাখে। এরপর সোমবার বিকেলে বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় দুজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি পিস্তল ও দুটি ওয়ান শুটারগান পাওয়া যায়। একই সঙ্গে ওই বাড়ি থেকে অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম ও বেশ কিছু নকল ওষুধ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী সময়ে রাতে আটক ব্যক্তিদের একটি প্রাইভেট কার জব্দ করে তল্লাশি চালানো হলে কারের সিটের তলা থেকে আরও একটি পিস্তল পাওয়া যায়।

পুলিশ সুপার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা অস্ত্র তৈরির কথা স্বীকার করেছেন। উদ্ধার করা আলামত দেখে ধারণা করা হচ্ছে, কারখানাটিতে অস্ত্রের পাশাপাশি নকল ওষুধ তৈরি করা হতো। সাত থেকে আটজনের একটি দল এই কাজের সঙ্গে জড়িত। বাড়ির মালিকসহ পলাতক ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে। বিকেলে তাঁদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপারের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শামিমা আক্তার, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) আবদুল হান্নানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here