ঢাকা :: বাজেটে পর্যটন খাতে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে করোনায় কর্মহীন পর্যটন শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বাসন, ছাঁটাই বন্ধ এবং হোটেল- রেষ্টুরেন্ট শ্রমিকদের রেশন, আবাসন, চিকিৎসা ও চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আজ বুধবার (২৪ জুন) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে “বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কাস-এমপ্লয়িজ ফেডারেশন” এর উদ্যোগে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতীকী অবস্থান ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের আহবায়ক মোহা: রাশেদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতীকী মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও সম্মিলিত পর্যটন জোটের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, বাংলাদেশ সেফ ইউনিটি এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক আহসান হাবিব শেফ, মো: মুরাদ শেখ, শামীম আহমেদ, শাহ আলম, রুকন উদ্দিন রাজীব প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, পর্যটন খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি বিকাশমান খাত। প্রত্যক্ষভাবে ১৫ লক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ২৩ লক্ষসহ প্রায় ৪০ লক্ষ অর্ধদক্ষ-দক্ষ, অর্ধ শিক্ষিত-উচ্চ শিক্ষিত শ্রমিক-কর্মচারীর কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যসহ প্রায় ২ কোটি মানুষের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করেছে পর্যটন খাত। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পর্যটন খাত বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনেরও একটি বড় উৎস। সরকারী সহায়তা-পরিচর্যা ছাড়াই পর্যটন শিল্প দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হয়ে উঠেছে। ২ বছর আগ পর্যন্ত পর্যটন শিল্পে বরাদ্দ ছিল নামমাত্র। চলতি বছরের বাজেটে বেসরকারী বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রাণলয়ের জন্য প্রায় ৩৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও তার ৮০ শতাংশ দেয়া হয়েছে বিমান চলাচল বিষয়ে বাকি অংশ ব্যায় হবে প্রশাসনিক আর অবকাঠামোগত উন্নয়নে। পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের উন্নয়নের জন্য বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়নি।

 বক্তারা আরও বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ খাত পর্যটন শিল্প। ফলে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেষ্টুরেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সী, ট্যুর অপারেটর, পর্যটক পরিবহনসহ পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন খাতের সাথে যুক্ত ৪০ লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকাংশই কর্মহীন হয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই খাতে শ্রম আইনের সুষ্ঠ প্রয়োগ না থাকায়; অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্র না থাকায় শ্রমিক-কর্মচারীরা অনেকক্ষেত্রে কোন রকম বেতন-ভাতা-ক্ষতিপুরণ ছাড়ায় চাকুরিচ্যুত হয়ে চরম অসহায়ত্বের মধ্যে নিপতিত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অসংখ্য দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী পেশা পরিবর্তন করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। অথচ পর্যটন শিল্প বিকাশের দ্বিতীয় প্রধান শর্ত হল প্রশিক্ষিত ও দক্ষ শ্রমিকের সেবা। ভবিষ্যতে পর্যটন শিল্পের বিকাশকে নিশ্চিত করতেই এই খাতে প্রণোদনা দিয়ে এই শিল্পের সাথে যুক্ত দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি রক্ষা করা জরুরী।

নেতৃবৃন্দ, পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন খাতের করোনা আক্রান্ত শ্রমিকদের বিনামূল্যে পরীক্ষা, স্বাস্থ্য বীমা, চিকিৎসা নিশ্চিত করা, করোনা সংক্রমনে মৃত্যুবরনকারী শ্রমিকের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা এবং খাদ্য নিরাপত্তায় আর্মি-পুলিশের মত রেশনের ব্যবস্থা করার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার আহবান জানান।

নেতৃবৃন্দ ছাঁটাই বা বেতন কর্তন বন্ধ করে করোনাকালে পর্যটন খাতের সকল শ্রমিকদের কাজ ও ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার পাশাপাশি পর্যটন খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রে শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার ও মজুরি বোর্ড গঠন করে পর্যটন খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি কাঠামো নির্দিষ্ট করার জোর দাবি জানান।  নেতৃবৃন্দ করোনাকালে পর্যটন খাতের শ্রমিকদের চাকরি ও মজুরি নিশ্চিত করতে প্রণোদনা ঘোষণা এবং বিমান মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক করে পর্যটনের বিষয়ে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠনেরও আহবান জানান।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here