প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

গাইবান্ধা-১ আসনের সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’

৪ জানুয়ারি বুধবার গণভবন থেকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রংপুর বিভাগের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গাইবাবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটন সুন্দরগঞ্জের নিজ বাসভবনে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।

প্রধানমন্ত্রী অপরাধীদের দ্রুত খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছি। যারা এর সঙ্গে জড়িত, যে কোনোভাবে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় শিক্ষক, অভিভাবক, মসজিদের ইমামসহ সব শ্রেণিপেশার জনগণকে জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সর্বস্তরের জনগণ সবার কাছে আমার একটাই আহ্বান থাকবে, বাংলার মাটিতে এই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্থান যেন না হয়।’

এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে ‘ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’র ভবন (দশ তলা) এবং ১০০০ আসনের ‘শেখ হাসিনা ছাত্রী হল’ এর (দশ তলা) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভিডিও কনফারেন্সে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া তথ্য সচিব মর্তুজা আহমেদ, শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসেইন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী। রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৬২৯৯টি স্থান থেকে প্রায় ৩১ লাখ মানুষ এই ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন।

বাংলার মাটিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে স্থান না দেওয়ার জন্য সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের গাইবান্ধায় একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য- যে জামায়াত-শিবিরের অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত, মানুষকে সব সময় নিরাপত্তা দিত, তাকেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিকে সংসদ সদস্যকে এভাবে হত্যা করা এটা কখনই মেনে নেয়া যায় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবেই বাংলার মাটিতে, এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলব যেভাবেই হোক অপরাধীদের খুঁজে বের করতে হবে এবং এদের উপযুক্ত শাস্তি- অবশ্যই দিতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা বিধানই অন্যতম লক্ষ্য। আর জাঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। কারণ জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস কখনও মানুষের জীবনে শান্তি বয়ে আনে না।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত গাইবান্ধার পুলিশ সুপারের কাছে লিটন, গাইবান্ধায় পুলিশ হত্যাসহ বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও মানুষ পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের মামলাগুলোর আসামি গ্রেপ্তার এবং তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান।

প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের মামলা ও দ্রুতবিচার আইনে নিষ্পত্তি হয়ে অদ্যাবধি অপরাধীদের সাজা না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত এসব মামলার চার্জশিট প্রদান এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর হবার নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সন্তানরা যেনো এসব অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে এ জন্য সর্বস্তরের মানুষের প্রতি অনুরোধ জানান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here