নিউজ ডেস্ক :: তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাড়ির মালিককে ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার একটি মামলায় বাংলাদেশি নারী মোমেনা সোমাকে ৪২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার একটি আদালত।

বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাওয়া ২৬ বছর বয়সী মোমেনাকে গতকাল বুধবার অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক লেসলি টেইলর এই সাজা দেন।

২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যান মোমেনা। তিনি মেলবোর্নের মিল পার্ক এলাকায় রজার সিংগারাভেলু নামে এক ব্যক্তির বাড়ি বাড়া নেন।

৯ ফেব্রুয়ারি তিনি বাড়ির মালিককে হত্যার জন্য ছুরি চালান বলে পুলিশের অভিযোগে বলা হয়। তার পরদিনই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

রজার সিংগারাভেলুর পাঁচ বছরের মেয়ের সামেনই ‘আল্লাহ আকবর’ ধ্বনি দিয়ে হামলা চালান মোমেনা। মেয়ে এখনও সেই ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এক ধরনের ট্রমায় ভুগছে। মানুষকে আস্থায় নিতে পারছে না বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।

ভিক্টোরিয়ার আদালত মোমেনা সোমকে যে শাস্তি দিয়েছেন, তাতে করে তাঁকে টানা ৩১ বছর ছয় মাস কারাভোগ করতে হবে। তারপর তিনি প্যারোলের আবেদন করতে পারবেন।

মোমেনাকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে গ্রেপ্তারের পর পরই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের মিরপুরের বাসায় অভিযান চালায় এবং তাঁর ছোটবোন আসমাউল হুসনা সুমনাকে (২২) গ্রেপ্তার করে। এ সময় সুমনাও ছুরি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

এ ব্যাপারে পরে ওই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, অস্ট্রেলিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোমেনা সোমাকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। তাদের ধারণা, মোমেনা সোমা জঙ্গিবাদের উদ্বুদ্ধ হয়েই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এই সূত্র ধরেই ঢাকায় মোমেনা সোমার বোন আসমাউল হুসনা সুমনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ আরো জানায়, মোমেনা সোমা রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। পরে অস্ট্রেলিয়া চলে যান। সেখানে গিয়ে সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটান। আসমাউল হুসনা সুমনাও রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। এ দুই বোনই অনলাইন মাধ্যম থেকে ‌‘সেলফ র‍্যাডিক্যালাইজড’ বা ‘স্বপ্রণোদিত হয়ে উগ্রপন্থার চর্চা’ করেছে। আগে মোমেনা জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন, পরে সুমনাকে উৎসাহিত করেছেন।

মনিরুল ইসলাম আরো বলেছিলেন, ‘মোমেনা তাঁর বোনকে বলেছে, অন্তত একজন পুলিশের ওপর হামলা করে যেন শহীদ হয়। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের যেসব বক্তব্য বা বিবৃতি অনলাইনে আছে, তা সংগ্রহ করে র‍্যাডিক্যালাইজড হয়ে অনেকে হামলা চালাচ্ছে। এটাকে জঙ্গিবাদে জাড়ানোর নতুন মাত্রা হিসেবে দেখছি আমরা।’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here