কলিট তালুকদার, পাবনা প্রতিনিধি :: পাবনার সাঁথিয়ায় পূর্ববিরোধের জের ধরে মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা চালিয়ে কলেজ পড়ুয়া মেয়ের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দগ্ধ করা মুক্তি (২২) কে আই,সি, ইউতে (লাইফ সাপোট) নিয়েও বাঁচানো গেল না। সোমবার দিনগত রাত সাড়ে ১২ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আই,সি,ইউতে মুক্তি পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে চির বিদায় নেয়।
সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমরা গ্রামের উন্মুক্ত জলাশয় দখলকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক ও তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বি সালাম গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিরোধকে কেন্দ্র করে ১৯ আগস্ট (রবিবার) দুপুরে সালাম গ্রুপ মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার চালায়। ওই হামলায় সালামের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জনের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অংশ নেয়।
এসময় বাড়ির পুরুষ সদস্যদের না পেয়ে হামলাকারীরা মোজাম্মেল হকের মেয়ে পাবনা সরকারী এ্যাডওয়ার্ড কলেজের দর্শন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মুক্তি খাতুনের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় তার চাচী তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকেও পিটিয়ে আহত করে। টের পেয়ে স্থানীয়রা অগ্নিদগ্ধ মুক্তিকে উদ্ধার করে প্রথমে সাঁথিয়া ও পরে ঢাকা মডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
শরীরের ৬২ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে আশংকা জনক অবস্থায় তাকে ২৬ আগস্ট সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আই,সি, ইউতে হস্তান্তর করা হয়। লাইফ সাপোটের দুই দিন পরে ২৭ আগষ্ট সোমবার দিনগত রাতে মারা যায় মুক্তি খাতুন।
মুক্তির বাবা মোজ্জাম্মেল হক কাঁন্না জড়িত কন্ঠে বলেন আমি এবং আমার পরিবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।
মুক্তির মৃত্যুর খবরে সাঁথিয়ার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুক্তির মৃত্যুর খবরে মঙ্গলবার ভোর থেকেই মুক্তির আত্বীয় স্বজনরা তাদের বাড়িতে আসতে শুরু করে। তাদের কান্নায় এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। তারা এ হত্যা কান্ডের সুষ্ঠ বিচার চান।
সাঁথিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধ সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ এ হত্যা কান্ডের সঠিক বিচার দাবি করেন।
এঘটনায় মুক্তির বাবা মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ঘটনার দিন ১৯ আগস্ট সন্ধ্যায় ৩২ জনকে আসামী করে সাঁথিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন। থানা পুলিশ ২৪ জন আসামী আটক করলেও প্রধান আসামী নাগ-ডেমরা ইউপির ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সালাম ও কেসমতের ছেলে জাহিদকে এখনও আটক করতে পারেনি।
সাঁথিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মজিদ জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এলাকায় সার্বক্ষনিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মুক্তির মৃত্যুকালীন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে কলেজ ছাত্রী মুক্তি খাতুনকে গাঁয়ে পেট্রোল ঢেলে হত্যার প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পাবনা জেলা শাখা ও আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট।
ম
ঙ্গলবার সকালে শহরের প্রধান সড়ক আব্দুল হামিদ রোডে প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন মহিলা পষিদ পাবনা জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক এ্যাড. কামরুন্নাহার জলি, আমরা পারি জোটের সদস্য সচিব আব্দুর রব মন্টুসহ অনেকে।