স্টাফ রিপোর্টার :: বর্ণিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে পঞ্চম জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপিত হয়েছে। সোমবার (৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংসদ একে এম রহমতউল্যাহ। বেলুন ও পায়রা উড়ানোর মধ্যদিয়ে চলচ্চিত্র দিবসের দুয়ার খোলে। এরপর নানা রঙ্গে সুসজ্জিত শোভাযাত্রায় অংশ নেন তারকাদের অনেকেই। বিএফডিসি থেকে বের হওয়া এই শোভাযাত্রাটি হাতিরঝিল হয়ে তেজগাঁও রেললাইন ঘুরে আবার বিএফডিসিতে এসেই শেষ হয়। এরপর বিএফডিসির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে তারকারা বিভিন্ন গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।
এ প্রসঙ্গে নায়ক রাজ রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য আজকের এই দিনটি অনেক আনন্দের। একজন চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে আমি সব সময়ই গর্ববোধ করি। চলচ্চিত্র না হলে নায়ক রাজের জন্ম হতো না। আজকের দিনে আমি দর্শকদের শুভেচ্ছা জানাই। কারণ তারাই আমাদের ভালোবাসা দিয়ে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তবে এত আনন্দের মাঝেও যখন ভাবি, চলচ্চিত্রের সেই সোনালী দিন এখন আর নেই, তখন কষ্টে বুক ভরে যায়। কিন্তু তার পরেও আমি আশাবাদী। হয়তো নতুন প্রজন্মের শিল্পী, পরিচালকদের হাত ধরে প্রযোজকদের সহযোগিতায় এবং দর্শকের হলমুখী হওয়ার মধ্যদিয়ে নিশ্চয়ই চলচ্চিত্রের সোনালী দিন আবার ফিরে আসবে।’
বিএফডিসিকে যেসব তারকারা মুখরিত করে রেখেছিলেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- সৈয়দ হাসান ইমাম, নায়ক রাজ রাজ্জাক, জাভেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, অঞ্জনা, নূতন, ওমর সানী, অমিত হাসান, সিমলা, কেয়া, সাইমন, নীরব, তমা মির্জা, পরিচালক সিবি জামান, সাঈদুর রহমান সাঈদ, মতিন রহমান, সোহানুর রহমান সোহান, মুশফিকুর রহমান গুলজার, এস এ হক অলিক, সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান ডায়ম-‘সহ আরও অনেকে।
সন্ধ্যা থেকে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এটি উপস্থাপনা করেন- রিয়াজ, আমিন খান ও পূর্ণিমা। এতে অংশ নেন বর্তমান ও সোনালি যুগের তারকারা। নাচ-গান ও অভিনয়ে পারফর্ম করেন রোজিনা, নূতন, ইলিয়াস কাঞ্চন, অঞ্জনা, ওমর সানী, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, অমিত হাসান, মৌসুমী, পপি, আমিন খান, শিমলা, পূর্ণিমা, কাজী মারুফ, পরীমনি, জায়েদ খান, মাহিয়া মাহি, নিপুণ, ববি, ইমন, নুসরাত ফারিয়া, নিরব, বাপ্পি, সায়মন, শুভ, সম্রাট, অমৃতা, মিষ্টি জান্নাত, ভাবনা প্রমুখ।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন কুমার বিশ্বজিৎ, শুভ্রদেব, সামিনা চৌধুরী, এসআই টুটুল, ডলি, অাঁখি আলমগীর, আসিফ, কণা, ন্যানসি, দিনাত জাহান মুন্নী, কোনাল, হৃদয় খান প্রমুখ।
সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিট এ আয়োজন চলে। এর আগে বেলা ৩টা থেকে দেড় ঘণ্টা ব্যাপ্তির সেমিনার হয়। সেমিনারের বিষয় ‘বর্তমান পরিবেশন ও প্রদর্শন পদ্ধতিই আমাদের চলচ্চিত্রের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়’।
বিকাল সোয়া ৫টায় ছিলো আধা ঘণ্টা ব্যাপ্তির বিশেষ টকশো। এতে উপস্থাপনা করবেন নির্মাতা ও প্রযোজক মোহাম্মদ হোসেন জেমী।
এ ছাড়া উদ্বোধন ও র্যালির পর থেকে সেমিনার, টকশো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে স্মরণিকা প্রকাশ, অতিথিদের লালগালিচা সংবর্ধনা ও সাক্ষাৎকার, মেলা, স্থিরচিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ পুতুল নাচ, নাগরদোলা, বায়োস্কোপ ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিনব্যাপী সমগ্র অনুষ্ঠানমালার নাম দেয়া হয় ‘তারার মেলা’। এটি পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন এস এ হক অলীক। চলচ্চিত্র দিবসের অনুষ্ঠান সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৯টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সরাসরি সম্প্রচার করেছে এটিএন বাংলা।