বরের বয়স ৮৫ কনের ১৩!মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল প্রতিনিধি  :: সরাইলে থেমে নেই বাল্য বিয়ে। স্ত্রীর মৃত্যু আত্মহত্যা সংসার জীবনে অশান্তি কোনটাই রোধ করতে পারছে না শিশু বিবাহ প্রথা। কিছু ক্ষেত্রে কাজী বেঁকে বসলেও বিয়ে হয়ে যায়। কারন স্থানীয় কিছু সমাজপতি ও জনপ্রতিনিধি টাকা পেলে সবই পারেন। তারপর রয়েছে নোটারী পাবলিক। আর প্রশাসনের দায়সারা বক্তব্য হচ্ছে- খোঁজ নিয়ে দেখছি। ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এরই মধ্যে সর্বশেষ উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে ৮৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ আবু মিয়ার সাথে বিয়ে হয়ে গেল ১৩ বছরের শিশু সালমার। এ বিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

আর প্রশাসন এখনো বলছে এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। স্থানীয় বাল্য বিয়ে বিরোধীদের বক্তব্য হচ্ছে- তাদেরকে জানানোর জন্য কি আরেকটি বিভাগ খুলতে হবে?

সরজমিনে অনুসন্ধানে ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, নোয়াগাঁও মুতাঈদ বাড়ির অলি আহমেদের ছেলে আবু মিয়া ৪ সন্তানের জনক। তার রয়েছে অর্ধডজনেরও অধিক নাতী নাতনী। আবু মিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরিয়ান পদে চাকুরী করতেন। ৪৫ বছর চাকুরী করার পর ২০০৫ সালের জুন মাসে তিনি অবসরে আসেন। তার স্ত্রী ছিল মানসিক ভারসাম্যহীন। বছরদিন আগে অসুস্থ হয়ে প্রথম স্ত্রী মারা যান।

কিছুদিন পরই আবু মিয়ার নজর পরে একই গ্রামের দিনমজুর রফিকুলের শিশু কন্যা সালমার (১৩) উপর। বছরদিন আগে সালমার বাল্য বিয়ে হয়েছিল নরসিংদীর এক ছেলের সাথে। ছেলেটি মাদকাসক্ত ও দরিদ্র হওয়ায় বিয়ের ৩ দিন পরই সালমা বাবার বাড়িতে চলে আসে। ১ মাস আগে ওই ছেলেকে ডিভোর্জ দিয়েছে সালমা।

সালমাকে বিয়ে করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায় বৃদ্ধ আবু মিয়া। মেয়েকে যৌতুক দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। এক পর্যায়ে সালমার পরিবার সম্মত হলেও বেঁকে বসেন কাজী।

কারন অপ্রাপ্ত বয়স্ক সালমা ডিভোর্জ দিয়েছে মাত্র ১ মাস আগে। ৩ মাস না হলে দ্বিতীয় বিয়ের বিধান নেই। আবু মিয়া আশ্রয় নেয় নোটারী পাবলিকের। গত ২৬ আগষ্ট শুক্রবার শিশু সালমার সাথে বিয়ে হয় আবু মিয়ার।

সালমাকে ১বিঘা ফসলি জমি ও বাড়ির ২ শতাংশ জায়গা লিখে দিয়েছেন বৃদ্ধ স্বামী। শিশু ও বৃদ্ধের এমন বিয়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে গোটা উপজেলায়। এ দম্পত্তিকে এক নজর দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে এসে ভির করেন উৎসুক লোকজন।

অথচ উপজেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। এ বিষয়ে বৃদ্ধ আবু মিয়া অল্প বয়সি সালমাকে বিয়ে করার কথা স্বীকার করে বলেন, সব মিলিয়ে ৪৫ বছর শুধু চাকুরীই করেছি। এখন একা। তাই বিয়ে করে ফেললাম।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বলেন , এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। খবর নিয়ে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here