মিডিয়াপার্টের আরেক খবরে বলা হয়েছে, তাঁদের দুই সাংবাদিকের মুঠোফোনে আড়ি পাতার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাখোঁ সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ এই দুই সাংবাদিকের মুঠোফোনে আড়ি পেতেছিল। এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে হাজারো ফ্রান্সবাসীর মুঠোফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। এর মধ্যে মিডিয়াপার্টের সাংবাদিক লেনেই বরদু ও প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ইদুই প্লেনেলও রয়েছেন।
পেগাসাস কোন কোন দেশ কিনেছে, এমন গ্রাহকের নাম প্রকাশ করে না ইসরায়েলি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপ। তবে ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, যেসব দেশে ফোনে আড়ি পাতার কাজে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, সে তালিকায় রয়েছে আলজেরিয়া, বাহরাইন, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কানাডা, মিসর, ফ্রান্স, গ্রিস, ভারত, ইরাক, ইসরায়েল, আইভরিকোস্ট, জর্ডান, কাজাখস্তান, কেনিয়া, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লাটভিয়া, লেবানন, লিবিয়া, মেক্সিকো, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, ওমান, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, পোল্যান্ড, কাতার, রুয়ান্ডা, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, তাজিকিস্তান, থাইল্যান্ড, টোগো, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উগান্ডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, উজবেকিস্তান, ইয়েমেন ও জাম্বিয়া। তবে কোনো দেশে ফোনে পেগাসাস স্পাইওয়্যারের উপস্থিতি পাওয়ার অর্থ এই নয় যে সে দেশের সরকার সফটওয়্যারটির গ্রাহক।
এই স্পাইওয়্যার একধরনের ম্যালওয়্যার। এর মাধ্যমে আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সব বার্তা, ছবি, ই-মেইল, কল রেকর্ড হাতিয়ে নেওয়া যায়। এই ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর অগোচরেই স্মার্টফোনের মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা চালু করে দেয়। এর মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম, সিগন্যালের মতো এনক্রিপটেড (আদান-প্রদান করা বার্তা শুধু প্রেরক ও প্রাপকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে) মেসেজিং অ্যাপের বার্তাগুলোও নজরদারির আওতায় চলে আসে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পেগাসাস ব্যবহার করে হাজারো মানুষের মুঠোফোনের তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বা চেষ্টা করা হয়েছে। এমন ৫০ হাজারের বেশি ফোন নম্বরের তথ্যভান্ডার পেয়েছিল প্যারিসভিত্তিক অলাভজনক সংবাদ সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজ। পরে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সহযোগিতা নিয়ে ওই নম্বরগুলো ধরে অনুসন্ধান চালায় বিভিন্ন দেশের ১৭টি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এই পেগাসাস ব্যবহার করে যাঁদের মুঠোফোনে আড়ি পাতা হয়েছে, তাঁদের তালিকাও প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমগুলো। এই তালিকায় বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও মানবাধিকারকর্মীরা রয়েছেন। এরপর থেকেই এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।