স্টাফ রিপোর্টার ::  যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে কেউ কর্মহীন থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়নের অভিষ্ট (এসডিজি গোল) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্জনে সরকার বদ্ধপরিকর এ লক্ষ্যে  দেশের যুবসমাজকে আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নিরলস কাজ করে চলেছে। আমরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর হতে এ পর্যন্ত প্রায় ৬২ লাখ যুবককে সময়োপযোগী বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছি। তন্মধ্যে প্রায় ২৩ লাখ যুবক স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে উঠেছে। আমরা প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখের অধিক যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। দেশের প্রতিটি উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বৈশ্বিক কর্মে যুবদের সম্পৃক্ততা।দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ইউএনভি বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে এ দিন বিকালে মতিঝিলস্থ যুব ভবনে ‘বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তরুণ ও স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় যুব ও ক্রীড়া  প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং যুব ও ক্রীড়া সচিব আকতার হোসেন।

ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, করোনার কারণে আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যাতে পিছিয়ে না পড়ে, যুবরা যেন কর্মহীন হয়ে না পড়ে- সেজন্য সরকার যুবদের জন্য গ্রামে আত্মকর্মসংস্থান নামক বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাত লাখ যুবক প্রশিক্ষণ ও যুব ঋণ সুবিধা পাবে।’

যুব উন্নয়নে জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, যুবদের উন্নয়নের স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে তাদের পণ্য বাজারজাতকরণের চ্যালেঞ্জ সফল ভাবে মোকাবিলার জন্য ‘যুব ব্যান্ড’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ ও প্রান্তিক যুব জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনলাইন মার্কেটিং চ্যানেল তৈরির লক্ষ্যে পাইকারি সেল ডটকম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

যুব উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত অন্যান্য পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ যুবদের জন্য একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী জাতীয় যুব নীতি প্রণয়ন করেছে। এ ছাড়া UNFPA-এর কারিগরি সহায়তায় জাতীয় যুব উন্নয়ন সূচক চূড়ান্ত হয়েছে এবং ন্যাশনাল ইয়ুথ কাউন্সিল গঠনের শেষ পর্যায়ে রয়েছি আমরা। দেশি-বিদেশি যুবকদের ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষে একটি ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণ করতে যাচ্ছি। যেখান থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের যুবকরা অনলাইনে আধুনিক ও উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে  পারবেন।’

যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী আরো বলেন, ‘২০২০ সাল বাংলাদেশের তরুণদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।কারণ আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছি, একই সঙ্গে বছরব্যাপী সারা বিশ্বের তরুণদের অংশগ্রহণে ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০-এর নানা বর্ণাঢ্য কর্মসূচি উদযাপন করব।’

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে মহাপরিচালক আখতারুজ্জামান কবীর অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন।প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন আসিফ সালেহ, নির্বাহী পরিচালক ব্রাক; ফারাহ কবির, কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ; আকতার উদ্দিন, কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ইউএনভি বাংলাদেশ।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সকালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পথচারী, রিকসা ও ভ্যানচালকদের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করে।

উল্লেখ্য, তারুণ্যের বিকাশ ও উন্নয়নে ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব মিনিস্টার রেসপনসিবল ফর ইয়ুথ ১২ আগস্টকে আন্তর্জাতিক যুব দিবস হিসেবে উদযাপনের প্রস্তাব করে। পরের বছর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দিনটিকে আন্তর্জাতিক যুব দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here