এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি

 

বান্দরবান জেলা শহরের ট্রাফিকমোড়ে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন মোটরসাইকেল চালক এক যুবক। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনতার পাল্টা হামলায় এএসপি সার্কেলসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন।

এ ঘটনার জের ধরে উত্তোজনা সৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতি সামালা দেয়ার জন্যে জেলা শহরের সাংগু সেতু এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সেনা সদস্যরা শহরে টহলদানও অব্যাহত রেখেছে।

এডিএমের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় জরুরি সভা।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে জেলা শহরের প্রাফিকমোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ মোবাইলকোর্ট বসায় অবৈধ মোটরসাইকেল ধরার জন্যে। তারই অংশ হিসেবে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র পরীক্ষা করার জন্য ব্যবসায়ী মো.আজাদ হোসেনের(২২) মেটর সাইকেল থামাতে বলে পুলিশ।

আজাদ মোটরসাইকেল না থামিয়ে চলে যাওয়ার সময় পুলিশ কনষ্টেবল পনয় চাকমা আজাদকে লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে আজাদ গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। স্থানীয় জনতা ও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দ্রুত বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে পুলিশের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে।

এ সময় পুলিশের সাথে দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে থানা ঘেরাও করে রাখে দীর্ঘক্ষন। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য ঘটনাস্থলে যান এবং পরে জনতা থানা থেকে সরে আসে।

ট্রাফিক মোড়ে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শিবলী কাইসার ও কনষ্টেবল সাব্বির, ব্যবসায়ী তৈয়ব এবং ইউসুফসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার পর পরই জেলা প্রশাসকরে সভাকক্ষে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে বংবন্ধু মুক্তমঞ্চে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা, জেলা প্রশাসক কেএম তারিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এম আবদুল কুদ্দুছ, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য কাজী মজিবুর রহমান, পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য্য এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জরুরি সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তসমুহ জানিয়েদেন।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য পনয় চাকমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সুত্র জানায়। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা হাকিম ইশরাত জামানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শহরের পরিস্থিতি সাময়িকভাবে শান্ত থাকলেও সাধারণ মানুষের মাঝে বিরাজ করছে চাপা আতংক।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here