remingca

এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি :: যুক্তরাষ্ট্রের এক অধ্যাপক বাংলাদেশের বান্দরবানে ম্রো জাতি-গোষ্ঠীর বিল্প্তুপ্রায় ‘রেংমিটচা’ নামক একটি ভাষা পুনআবিস্কার এবং এ ভাষাকে পুনজ্জীবিতকরণে গবেষণা কর্ম চলছে বলে জানিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিঞ্জান বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপক পুনআবিস্কৃত এ ম্রো ভাষার বর্ণমালা তৈরি, ম্রো জাতি-গোষ্ঠীর মাঝে এ ভাষার প্রচলনের ধারনাপত্র তৈরি ও সর্বক্ষেত্রেই ব্যবহার উপযোগী করে তোলার লক্ষ্যে আরও কয়েক বছর গবেষণাকর্র্ম চলমান থাকবে বলে জানান।

রোববার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাকক্ষে ম্রো জাতি-গোষ্ঠীর ‘রেংমিটচা’ নামীয়  ভাষা পুনআবিস্কারক ও আন্তর্জাতিক ভাষা গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের ডার্টমুথ কলেজের গ্রোগ্রাম ইন লেংগুয়েষ্টিক্স অ্যান্ড কন্সনিটিভ সায়েন্স মি.ডেভিড এ পিটারসন এবং তাঁর গবেষণা কর্মের সহযোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিঞ্জান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাইরা খান.রেংমিটচা ভাষার কর্মশালায় উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য প্রকাশ করেন।

মি.ডেভিড এ পিটারসন বলেন,যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের ডকুমেন্টিং এন্ডেন্জার্ড লেংগুয়েজেস প্রোগ্রাম বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বান্দরবানে ম্রো জনগোষ্ঠীর পুনআবিস্কৃত  রেংমিটচা ভাষা সংরক্ষণকে সর্বোপরি গুরুত্ব্পুর্ণ একটি কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই রেংমিটচা ভাষার প্রচলনে ধারণাপত্র,এ ভাষা ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা এবং গ্র“পভিত্তিক ম্রো সম্প্রদায়ের মাঝে এ পুনআবিস্কৃত ভাষার বিস্তার ঘটানোয় গবেষণা কর্ম চলমান রয়েছে।

কর্মশালায় যুক্তরাষ্ট্রের অধ্যাপক ও রেংমিটচা ভাষার গবেষক মি.ডেভিড জানান, তিনি  ১৯৯৯ সালে প্রথম পার্বত্য চট্টগ্রামে আসেন তিনি এ সময় ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তাগুলোর ভাষা নিয়ে গবেষণা করেন। ২০০৯ সালে তিনি বান্দরবানে বসবাসরত ম্রো জনগোষ্ঠীর পুনআবিস্কৃত ভাষা রেংমিটচা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ জানুৃয়ারি এ ম্রো ভাষার গবেষণা কাজে তিনি বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলা সফর করেন। সেখানে ১০জন ম্রো নিয়ে রেংমিটচা ভাষা চর্চার ওপর একটি কর্মশালাও করেছেন।

তিনি বিগত দুই প্রজন্মের আগে পাহাড়ে রেংমিটচা নামক ম্রোদের বিলুপ্তপ্রায় এ ভাষার প্রচলন ছিল বলে দাবি করে জানান, এ ভাষা এখনও জানেন এমন ৩০জন ম্রো সম্প্রদায়ের লোকের সন্ধান পেয়েছেন তিনি এবং তাদরে একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। পুনআবিস্কৃত এ রেংমিটচা ভাষার কার্যকরী গবেষণা কর্মে এসব ম্রো জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে এ ভাষাকে বান্দরবান জেলা তথা ম্রো অধ্যূষিত এলাকাসমুহে ছড়িয়ে দেয়ার কার্যক্রম বা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। বান্দরবান প্রেসক্লাবে রোববার অনুষ্ঠিত রেংমিটচা ভাষার কর্মশালায় এ ভাষা জানা ১০জন ম্রো এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা অংশ নেন।

পুনআবিস্কৃত রেংমিটচা ভাষা গবেষণা কাজে সহায়তা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিঞ্জান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাইরা খান এব বান্দরবান জেলা শহরের এনজিও কর্মী আজহারুল ইসলাম বাবুল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিঞ্জান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাইরা খান এ প্রতিবেদককে বলেন,পুনআবিস্কৃত ম্রো জনগোষ্ঠীর ‘রেংমিটচা’ ভাষার চর্চাসহ এ ভাষার বিস্তার ঘটানোর কাজটি হবে খুবই কঠিন, তবু গবেষক ও স্থানীয়দের সহায়তা এ কাজটি পুরোপুরি সম্ভব বলে তিনি জানিয়েছেন।


Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here