পাহাড়ধসে নারী-শিশুসহ ৬জন নিহতএনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি :: টানা ৪দিনের প্রবলবর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে পাহাড়ধসে মা-মেয়সহ নিহত হলেন শিশুসহ ৬জন। সোমবার রাত থেকে বান্দরবান জেলায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানি বন্দি। মাতামুহুরী, সাংগু এবং বাকঁখালী নদীতে পানি বিপদসীমার ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা বন্যায় কবলিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক সাংবাদিকদের জানান, মংগলবার ভোররাতে প্রবলবর্ষণে পাহাড় ধসে ঘরচাপায় জেলা শহরের অদুরে লেমুঝিরি এলাকা শ্রমিক আলমরে স্ত্রী কামরুন্নাহার (৪০) ও তার কন্যা সুফিয়া বেগম (৮), কালাঘাটা এলাকায় রেভা ত্রিপুরা (২২) মিটু বড়য়া (৫),তার বোন শুভ বড়-য়া (৪) এবং লতা বড়-য়া (৭) নিহত হয়েছেন।

পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।  ঘনটাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক এবং সরকারি কর্মকর্র্তাসহ জনপ্রতিনিধিরা।

জেলার নানাস্থানে প্রধান সড়ক ও কয়েকটি সেতু বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সোমবার রাত থেকে বান্দরবান জেলা সদরের সাথে চট্টগ্রাম ও রাংগামাটিসহ সারাদেশের সড়কপথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জেলার অপর ৬টি উপজেলা সদর ও জেলা সদরের মধ্যে সড়ক  যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সোমবার সন্ধ্যা থেকেই। জেলা শহরসহ ৭টি উপজেলায় ২দিন ধরে বিদ্যুত ও পানি সরবরাহ বন্ধ। মোবাইল কোম্পানীগুলোর নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়েছে গত সোমবার বিকেল থেকে।

জেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, জেলায় প্রায় ৪০টি অস্থায়ী বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেইসব আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত বন্যাদুগতদের মাঝে শুকনা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

জেলা মৃত্তিকা ও পানি বিভাজন কেন্দ্রের প্রধান বৈঞ্জানিক কর্মকর্তা ড. মাহবুব আলম বলেন,অবাধে গাছপালা এবং পাহাড়ের অংশ কর্তনই ব্যাপকহারে পাহাড় ধসের প্রধান কারণ। তিনি জানান,পাহাড় ও বন কর্তনের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আনা না হলে অচিরেই জেলায় আরও ব্যাপকহারে পাহাড় ধসে প্রাণ ও সম্পদহানির  আশংকা রয়েছে।

নিহত ৬জেনর পারিবারিক সুত্র জানায়,তারা শ্রমিক ও শ্রম কাজেই পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপুর্ণভাবে বসবাস করে আসছিলেন। তারা বলেন,সরকারি নির্দেশনা ও প্রচলিত নিয়মে সারাদেশে ভমিহীনদের মাঝে সরকারি খাসভুিম বন্দোবস্তি প্রদান করা হলেও তিন পার্বত্য জেলায় স্থানীয় কঠোর আইনের কারণে ভুিম বন্দোবস্তিও বন্ধ বিগত ২৫ বছর ধরেই। ফলে বাধ্য হয়েই জেলার নানাস্থানে কমপক্ষে ৩০ হাজার ভুমিহীন পরিবার মাথাগোজার ঠাঁইটুকুও না থাকায় বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশেই জীবনের অতিঝঁ’কি নিয়ে বাস করছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here