কলিট তালুকদার, পাবনা প্রতিনিধি :: পাবনায় এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলায় অপর দুইজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার দাড়িয়াল গ্রামের মৃত আনোয়ার খানের ছেলে ইকবাল খান (৪৪) ও পাবনার সুজানগর উপজেলার নিয়োগীর বনগ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে আজিম উদ্দিন (৪৫)। খালাসপ্রাপ্ত দুইজন হলেন, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার মৃত রবু মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া (২৭) ও একই উপজেলার ছয়শো করোটিয়া গ্রামের মৃত ছাইদ মিয়ার ছেলে ইয়াসিন মিয়া (৫৫)।

মামলার বিবরনিতে জানা গেছে, মোবাইলে প্রেমের সম্পর্কের সুত্র ধরে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার রুবেল হোসেনের কাছে চলে যান রাজবাড়ির কালুখালি উপজেলার জলিল সরদারের মেয়ে কাকলী খাতুন। ২০১২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কাকলী খাতুনকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে নিয়ে যায় রুবেলের বন্ধু ইকবাল ও আজিম। বাড়িতে ফিরিয়ে না দিয়ে সুজানগরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে তারা।

পরদিন ৪ সেপ্টেম্বর সুজানগরের রামজীবনপুর মাঠ থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে পুলিশ কাকলীর মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। পরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে জড়িত সন্দেহে উল্লেখিত চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুইজন ইকবাল ও আজিম আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়।

তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৬ জুন ওই চারজনকে আসামী করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সুজানগর থানার এসআই জুলফিকার আলী। মামলায় ১৬ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার ইকবাল ও আজিম কে মৃত্যুদন্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। এছাড়া রুবেল ও ইয়াসিন নামের দুইজনকে খালাস দেন। রায় ঘোষণার সময় ৩ জন আসামী আদালতে উপসি’ত ছিলেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন ও সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুর রকিব। আসামীপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কাজী মকবুল আহমেদ বাবু, অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান ও অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম সুমন।

রায়কে স্বাগত জানিয়ে পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ খান রতন জানান, এ রায়ের মাধ্যমে মানুষ ধর্ষণের সাজা সম্পর্কে সচেতন হবে এবং ধর্ষণের ঘটনা কমে আসবে বলে আশা করি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here