টিআইবিস্টাফ রিপোর্টার :: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পানি ও বর্জ্য পানি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে বাংলাদেশ পানি আইন ২০১৩ এর দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিসহ সাত দফা সুপারিশও উত্থাপন করে টিআইবি।

টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ইয়েস গ্রুপের সদস্য, টিআইবি’র কর্মী ও সদস্য এবং বিভিন্ন সমমনা সংগঠনের সদস্যবৃন্দ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি বাংলাদেশের পানিখাতে সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। বাংলাদেশের ৮৭ শতাংশ জনগণের নিরাপদ পানীয় জলের উৎসে অভিগম্যতা রয়েছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে দাবি করা হলেও বাস্তবে অধিকাংশ নাগরিক নিরাপদ পানির অভাবে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রায় ৭০ মিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানির অভাবে বিভিন্ন ধরণের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়, এমনকি মৃত্যুও ঘটে। দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যা, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়ন, অপরিকল্পিত পানি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব প্রভৃতি বাংলাদেশের পানিখাতে সমস্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

মানববন্ধনে টিআইবি উত্থাপিত সাত দফা সুপারিশ হলো: পানি সম্পদ রক্ষায় ‘বাংলাদেশ পানি আইন ২০১৩’ এর দ্রুত বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের অংশগ্রহণে তা পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করা; পানি খাত সংশ্লিষ্ট সরকারের বিভিন্ন বিভাগসমূহের কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি পরিহার করে বিভাগগুলোকে একীভূতকরণের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে পানি সম্পর্কিত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার পথ সুগম করা; সকল ধরণের কলখারখানার জন্য একক বা কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জ্য শোধনাগার (এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) স্থাপন নিশ্চিতে কঠোর জরিমানার ব্যবস্থা করা;  এবং শিল্পবর্জ্য নির্গমন রোধে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালার কঠোর প্রয়োগ ও পানি দূষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জরিমানা আদায় নিশ্চিত করা। এছাড়াও প্রভাবশালী ব্যক্তি, ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অবৈধভাবে দখলকৃত নদী, জলাশয় ও জলাভূমিসমূহ দখলমুক্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং জলাধারসমূহ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা; জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উৎস হতে পানি খাতে বরাদ্দকৃত তহবিলের সুষ্ঠু বরাদ্দ ও ব্যবহার নিশ্চিতকরণের জন্য স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে সকল ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও  বাস্তবায়ন এবং পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে স্থানীয় কমিউনিটির অংশগ্রহণ শক্তিশালী করাসহ টেকসই ব্যবস্থাপনায় তাদের সমর্থন ও প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিশ্চিতের দাবি জানায় টিআইবি।

এছাড়াও টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় দেশের ৪৫টি অঞ্চলে গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সেমিনার, আলোচনাসভা ও নাটকসহ বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে দিবসটি উদ্‌যাপন করছে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here