রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে শীতকালিন বিভিন্ন শাক-সবজি  অগ্নিমূল্যে  বিক্রি হলেও দেশের  সবজি উৎপাদনকারি অন্যতম জেলা হিসেবে খ্যাত জয়পুরহাটে এখন সবাজ বিক্রি হচ্ছে অনেকটা পানির দামে। আর প্রতিদিনই কমছে এই সবজির দাম।ক্রমাগত সবজির এ মূল্য পতনে চরম বিপাকে পড়েছে জেলার সবজি চাষীরা।

জেলার বৃহৎ পাইকারী সবজি বাজার আক্কেলপুরে বর্তমানে প্রতিকেজি মূলা বিক্রি হচ্ছে ১থেকে দেড় টাকায়, করলা ৫থেকে ৬ টাকা, পোটল ৮থেকে ১০টাকা, বেগুন ৫থেকে ৬ টাকা এবং জাত ও প্রকার ভেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে- প্রতিটি ৮থেকে ১০টাকায়।আনুপাতিক হারে কমেছে সিম,কপি সহ অন্যান্য সবজির দামও।দিনের শুরুতে যে দর থাকে,দুপুর গড়িয়ে যাবার সাথে সাথে  ওই দর ক্রমশ: কমতে শুরু করে।যেমন করলা উর্ধে ২০০টাকা মন দরে বিক্রি শুরু হলেও একই দিনই বিকালে ওই করলাই নেমে আসে প্রতিমন শুধু ৮০টাকায়।  ঈদের পর সপ্তাহখানেক এ দাম ছিল আরও নিচে, বর্তমান দরের প্রায় অর্ধেক ।তবে  নবান্নের পর গত ৪/৫দিনে বাজার দর কিছুটা বেড়ে এমনটি হয়েছে।।কিন’ এ দরে কষ্টার্জিত সব্‌জি বিক্রি করে উৎপাদন খরচই উঠছে না চাষীদের।জেলার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে সরবরাহ বেশী থাকায় আড়ৎদাররা সবজি ক্রয়ে আগ্রহ না দেখায় বাকীতে সব্জি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কোন কোন চাষী।

জেলা কৃষি অধিদফতরের দেয়া তথ্যানুসারে,এবার জয়পুরহাট জেলায় প্রায় ২০হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালিন বিভিন্ন সবজির চাষ করা হয়েছে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন হয়েছে বাম্পার। ফলে শীতের শুরুতেই জেলার বিভিন্ন বাজার গুলোতে বিভিন্ন জাতের সবজি উঠতে শুরু করেছে।কিন’ শীত মৌসুমের শুরুতে আগাম সবজি চাষ করে যেখানে বেশি মূল্য পাবার কথা সেখানে এবার উল্টোচিত্র,ঈদের পর থেকে  হঠাৎ সব্‌জির দাম নিম্নমুখি হওয়ায় চাষীরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না ।নবান্নের পর, গত কয়েক দিনে সবজির দর কিছুটা বাড়লেও তাতে চাষীদের তেমন লাভ হয়নি,বরং উৎপাদন খরচ না উঠায় লোকসানই গুনতে হচ্ছে।

সবব্জির বাজার দর কম হওয়ার কারন হিসাবে বাজারে সবজির বেশী সরবরাহকে দায়ী করছেন সবজি ব্যবসায়ী ও আড়ৎদার। এ ছাড়া ঢাকার কাওরান বাজার,শ্যাম বাজার সহ বিভিন্ন পাইকারী বাজারেও এখন কম মূল্য বিরাজ করছে।অথচ সেখানে প্রতিটি শীতকালিন সবজি বিক্রি হচ্ছে অগ্নিমূল্যে।-সেখানকার পাইকারী বাজারের সাথে খুচরা  মূল্যে  মধ্যে সামঞ্জস্য নেই-  বলে অভিযোগ তাদের। চাষী বলছেন, বীজ,সার,কীটনাশক ও মুজুরী ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সবজি চাষে খরচ বেশি হলেও উৎপাদিত সবজির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় লাভ দুরের কথা চাষীদের উৎপাদন খরচই উঠছে না ।এমনি অবস’ায় প্রতিমন মুলা ৪০টাকায় নেমে আসার কথা শুনে রাগ ও ক্ষোভে কোন কোন চাষী তাদের উৎপাদিত মুলা বাজারে নেয়ার পবিবর্তে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন।

এসএস মিঠু, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে শীতকালিন বিভিন্ন সব্‌জি বিক্রি হচ্ছে পানির দামে

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here