ছাদেকুল ইসলাম রুবেল।

গাইবান্ধা: বাম্পার ফলনেও হাসি নেই গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার মরিচ চাষিদের মুখে। নায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম আর পুঁজি খাটানোর পর উৎপাদন খরচ উঠানোই দায় হয়ে পড়েছে চাষিদের।

moresস্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা দালাল-ফরিয়া চক্রকে দুষলেও আড়তদাররা বলছেন ব্যাপক সংগ্রহ থাকায় দাম কমেছে মরিচের।

গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। এ ছাড়াও পাশ্ববর্ত্তী এলাকায় মরিচ চাষ হয়ে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে এখানে প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বছরের চাইতে এ বছর ফলনও হয়েছে ভাল। তবে, ফলন ভাল হলেও দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা হতাশ।

গোয়ালপাড়া গ্রামের মরিচ চাষি ঝিরঝিরি রশিদ জানান, জমি তৈরি, সার, চারা, কীটনাশক, কৃষি শ্রমিক সব মিলিয়ে মরিচ চাষে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও নায্য দাম পাচ্ছেন না তারা। স্থানীয় আড়তগুলোতে মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে কেজি প্রতি ৭ থেকে ৯ টাকা দরে। যদিও খেত থেকে মরিচ তুলতে শ্রমিককেই দিতে হয় কেজিতে ৩ টাকা, সেই সঙ্গে রয়েছে পরিবহন খরচও। লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না তাদের।

একই উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের মরিচ চাষি মন্টু মিয়া জানান, বিঘাপ্রতি মরিচের উৎপাদন হয়েছে ৩৫ থেকে ৫০ মণ। বর্তমানে প্রতিমণ মরিচের দাম ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা। এক বিঘায় আবাদ করতে ২০/২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে মরিচের যে দাম তাতে লাভতো দূরে থাক উৎপাদন খরচই উঠছে না। এই অবস্থায় উপজেলার কৃষকদের মাথায় হাত।

কালিবাড়ি হাটের আড়তদার তমাল জানান, এ বছর মরিচের ব্যাপক ফলন হয়েছে। বাজারে প্রচুর মরিচের আমদানী হওয়ায় এর দাম কমে গেছে। এ ছাড়াও ঢাকার বাজারে অন্য জেলার মরিচের ব্যাপক আমদানি থাকায় কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর মরিচের ব্যাপক ফলন হয়েছে। তবে উৎপাদন ভাল হলেও কৃষকরা তাদের নায্যদাম পাচ্ছেনা। উপজেলার মরিচ চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে অধিক উৎপাদন আর সেই সাথে সংঘবদ্ধ দালাল-ফরিয়া চক্রও এরজন দায়ী বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here