মো.সফিকুল আলম দোলন, জেলা প্রতিনিধি,পঞ্চগড় ::

উত্তরের সীমান্ত জেলা পঞ্চগড় দেশের চা উৎপাদনে দ্বিতীয় অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। দুই দশকের বেশি সময় চা-শিল্পে বদলে গেছে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা। কিন্তু এখানকার বাগান থেকে উৎপাদিত কাঁচা চা-পাতার ন্যায্য মূল্য না পাওয়া এবং দাম ওঠানামার কারণে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা।

বিষয়টি সরকারের কাছে নজরে আসায় উত্তরাঞ্চলের চা-শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর পঞ্চগড়ে তৃতীয় চা
নিলাম কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান বাংলাদেশ চা বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল
ইসলাম।পঞ্চগড়ের ধাক্কামারায় তৃতীয় নিলাম কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

চা-বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অকশন মার্কেট এলাকা চিহ্নিত করে পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে কার্যক্রম। এ কার্যক্রমে এখানে টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ গঠন করা হয়েছে। টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ পরিচালনায় ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের
সভাপতি আমিরুল ইসলাম খোকনকে আহ্বায়ক ও পঞ্চগড়ের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান শেখকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।

এদিকে জেলার ধাক্কামারায় তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে চা ওয়্যার হাউজ, ব্রোকার হাউজসহ সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চা- বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরামর্শে গড়ে উঠছে ওয়্যার হাউজ, ব্রোকার হাউজ, টি টেস্টিং ল্যাব, বায়ার কমফোর্ট জোন। প্রস্তাবিত চা নিলাম কেন্দ্রের অবকাঠামোও প্রস্তুত করা হয়েছে।

চা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পঞ্চগড়ে অকশন মার্কেট ঘোষণা হলেই চা-চাষিরা তাদের বাগানের উৎপাদিত চা-পাতা বিক্রি
করে ন্যায্য মূল্য পাবেন। সেইসঙ্গে অনেক শিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং সরকারও বিপুল অংকের রাজস্ব পাবেন।

জানা গেছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চা নিলাম কেন্দ্রশ্রীমঙ্গলে নিলাম করা ৭০ শতাংশ চা আসে পঞ্চগড় থেকে। এ সিংহভাগ চা পঞ্চগড় থেকে আসলেও এখানকার চা চাষিরা পাচ্ছেন না ন্যায্য দাম।

বাংলাদেশ চা বোর্ড আঞ্চলিক ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, জেলার ধাক্কামারায় দেশের তৃতীয় নিলাম কেন্দ্র গড়ে উঠছে।

ইতোমধ্যে চারটি ওয়যারহাউজ এবং ৭টি ব্রোকার হাউজ প্রতিষ্ঠার আবেদন পাওয়া গেছে। কয়েকটি স্থাপনাও গড়ে উঠেছে। চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পরিদর্শনও করেছেন। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিলেই চালু হবে বহুল কাক্ষিত তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্রটি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here