স্টাফ রিপোর্টার:

 

আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী কর্তৃক নির্বাচন কমিশনে প্রদত্ত হলফনামার তথ্য অনুযায়ী মন্ত্রী সাংসদদের অনেকেই বিগত পাঁচ বছরে অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হওয়ার সংবাদে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

অন্যদিকে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হওয়ার দোহাই দিয়ে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্তেও টিআইবি গভীর হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া অনুসরন পূর্বক এ বিষয়ে অতি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দুদকের প্রতি জোড়ালো আহ্বান জানিয়েছে।

আজ এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন,“এই ব্যাপক সম্পদের আহরণ যদি জ্ঞাত আয়ের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে তা সম্পূর্ণ বেআইনী এবং সংবিধানের ২০(২) ধারা অনুযায়ী অসাংবিধানিক।

প্রশংসনীয় সক্রিয়তার সাথে উল্লিখিত তথ্য প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতিতে তিনি বলেন, “প্রার্থীদের হলফনামা ও নির্বাচন কমিশন সূত্রে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই চিত্র  ক্ষমতার অপব্যবহারের নগ্ন উদাহরণ এবং সরকারি ও জনপ্রতিনিধিত্ত্বের অবস্থানকে মুনাফা অর্জনের উপায় হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদ আহরণের একটি উপদ্রবমূলক প্রবণতা।

এ অনিয়ম প্রতিহত করতে না পারলে জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার সকল সম্ভাবনা চিরতরে ধুলিসাৎ হবে।”

ড. জামান বলেন, “জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে এধরনের ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য জনগণ সরকার গঠনের লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করে না। এধরনের ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদেরকে বিচারের আওতায় আনতে না পারলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ থেকে সকল পর্যায়ে দুর্নীতির আরো প্রকট বিস্তার ঘটবে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হবে। এর ফলে ক্ষমতা-কেন্দ্রিক রাজনীতির চলমান প্রবণতা আরো বৃদ্ধি পাবে। ”

ড. জামান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন যে উদাসিন্য প্রদর্শন করেছে তা অত্যন্ত হতাশাজনক। এতে দুর্নীতি দমন কমিশনের নেতৃত্বে আসীন ব্যক্তিদের নিষ্ঠা ও সাহসের অভাব এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তাদের অঙ্গীকারের ঘাটতিরই নির্দেশ করে।

বৈধ সূত্র বর্হিভূত সম্পদ আহরণজনিত অনিয়মের ক্ষেত্রে দুদক এর স্বপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের যে আইনী ক্ষমতা রয়েছে তার প্রয়োগে দুদকের অনীহা প্রতিষ্ঠানটির মৌলিক চরিত্রকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে এতে কোন সন্দেহ নেই।”

তিনি উল্লেখ করেন, “সরকারের বি-টিম এর ভুমিকা পালন না করে দুদক কমিশনারগণ একবারের জন্য হলেও সততা ও সাহসের সাথে সকল প্রকার প্রভাবমুক্ত হয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের স্বদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে জন আস্থা পুনরুদ্ধারে ব্রতি হতে পারেন। অন্যথায় দুদকের শীর্ষ নেতৃত্বে তাদের অবস্থানের যথার্থতা আরো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ”

টিআইবি মনে করে এ প্রেক্ষিতে  দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য, কারণ তা করতে না পারলে ব্যাপক জনপ্রত্যাশা সৃষ্টি করে সম্পদের হিসাব প্রকাশের বাধ্যবাধকতার যে বিধান করা হয়েছে তা অর্থহীন  হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here