গাইবান্ধা : গাইবান্ধা জেলার একমাত্র ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের রংপুর সুগার মিল থেকে কর্তৃপক্ষ চাষিদের দেনা টাকার পরিবর্তে পুরাতন চিনি দিয়ে সেই চিনি বাজারে বিক্রি করতে না পারায় চাষিদের বিপাকে ফেলেছে।
নতুন চিনি না দিয়ে মিল কর্তৃপক্ষ তাদের ২-৩ বছর আগেকার পুরাতন চিনি দেয়ায় সেই নিম্নমানের চিনি তাদের কাছ থেকে কেউ কিনে নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সুগার মিলে আখ মাড়াই বন্ধ হওয়ার পরও চাষিরা তাদের আখের মূল্য না পাওয়ায় এবং তার উপর মিল থেকে চিনি নিয়ে বাজারে বিক্রি করতে না পারায় চাষিদের মনে ব্যাপক ড়্গোভের সৃষ্টি হয়েছে।
যে কোন মহুর্তে মিল কর্তৃপড়্গের সাথে তাদের দ্বন্দের আশংকা লড়্গ্য করা যাচ্ছে। অনেক আখ চাষি আগামীতে আখ চাষ না করার সিদ্ধানত্ম নিয়ে ফেলেছে।
জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর ৭০ হাজার মে.টন আখ মাড়াই করে সাড়ে ৪ হাজার মে.টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে রংপুর সুগার মিলে ২০১৩-২০১৪ আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করা হয়।
গত ১৭ মার্চ সোমবার সকাল সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত৮০ দিনে এ সুগার মিলে ৯২ হাজার ৬শ ৪০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৫ হাজার ৩শ ২৮ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করে সুগার মিলটিতে চলতি মাড়াই মৌসুমের আখ মাড়াই বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
বর্তমানে সুগার মিল থেকে আখ চাষিদের পাওনা রয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। চাষিরা কষ্ট করে আখের আবাদ করার পর সেই আখ সুগার মিলে সরবরাহ করে আজ পর্যন্ত মিল থেকে তাদের আখের মূল্য দেওয়া হচ্ছে না। গত কয়েকদিন পূর্বে স্থানীয় বেশ কিছু আখ চাষি সুগার মিল থেকে পাওনা টাকার পরিবর্তে প্রায় ১৫ মে.টন চিনি উত্তোলন করেছে বাজারে ঐ চিনি বিক্রি করে টাকা তোলার জন্য।
কিন্তু সুগার মিল কর্তৃপক্ষ তাদের মিলের গোডাউনে পড়ে থাকা ২-৩ বছর আগেকার পুরাতন চিনি দেওয়ায় ঐ পুরাতন ও নিম্নমানের চিনি তারা বাজারে বিক্রি করতে পারছে না। মিল থেকে টাকা না পাওয়ায় তার উপর পুরাতন চিনি বাজারে বিক্রি করতে না পারায় চাষিদের মাঝে ব্যাপক ড়্গোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ সকালে সুগার মিলে জমা হওয়া চিনি উত্তোলনকারী বেশ কিছু আখ চাষি জানিয়েছে, পুরাতন চিনি দিয়ে সুগার মিল কর্তৃপড়্গ তাদের বেশি বিপদে ফেলেছে।
এব্যাপারে সুগার মিল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা জানায়, চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের নির্দেশ মতে আমরা পুরাতন চিনি শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন চিনি দিতে পারছি না। তবে নতুন চিনি দেয়া হলে অনেক চাষিই পাওনা টাকার পরিবর্তে চিনি উত্তোলন করবে। এতে সুগার মিলের প্রায় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা চাষিদের পাওনা পরিষোধ হবে।
অনেক চাষিই আগামীতে আখ চাষ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। পাওনা টাকার জন্য যে কোন মহুর্তে মিল কর্তৃপক্ষের সাথে চাষিদের দ্বন্দের আশংকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আবু তাহের/