jamaica-01নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের রাস্তায় প্রথমবারের মতো বাজানো হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত শুক্রবার দিনভর সেখানে এই ভাষণ বাজানো হয়। আয়োজক ছিলেন জ্যামাইকা শহরে বসবাসরত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ খবর দিয়েছেন বার্তা সংস্থা বাংলা প্রেস।

আয়োজকরা জানান, তাঁরা নিউ ইয়র্ক কর্তৃপক্ষের কাছে শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজানোর অনুমতি চান। কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো তাঁদের আবেদনে সাড়া দেয়। পরে শুক্রবার জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউয়ের স্টার কাবাব রেস্তোরাঁর সামনে দিনভর ৭ই মার্চের ভাষণ বাজান তাঁরা।

এ ছাড়া সন্ধ্যায় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শোক দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক এ কে এম শফিকুল ইসলাম। সভা পরিচালনা করেন কমিটির সদস্যসচিব স্বীকৃতি বড়ুয়া। বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন জহুরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেন ও কমিটির সমন্বয়ক সফিকুল আলম সাহিদ। কোরান তেলওয়াত করেন হাফেজ বেলাল এবং দোয়া পরিচালনা করেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পেশ ইমাম আবু জাফর বেগ। এরপর নিহতের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং একটি শোক প্রস্তাব গ্রহন করা হয়।

সভা শুরুর আগে ১৫ই আগষ্ট জাতির পিতার হত্যাকান্ডের সেই কালরাত্রির বিবরন সহ গোপালগঞ্জের টুঙ্গী পাড়ায় দাফন পর্বের একটি প্রামান্য চিত্র জ্যামাইকাবাসীর সামনে প্রদর্শন করা হয়। এসময় দর্শকদের মধ্যে অনেককে চোখের জল মুছতে দেখা যায়।

বাঙ্গালী অধ্যুষিত জ্যামাইকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভায় বক্তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্টার লক্ষ্যে দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতিকে প্রস্তুত করেন বলে উল্লেখ করেন। দৃঢ় সংকল্পে বাঙ্গালী জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। পরাজিত শত্রুদের জন্য এটা ছিল রাজনৈতিক, সামরিক ও নৈ্তিক পরাজয়। এই পরাজিত শক্তির চক্রান্তে সেদিন জাতির জনক সহ তার পরিবারের ১৯জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এটি শুধু জাতির পিতার পরিবারের হত্যাকান্ড ছিল না, এটি ছিল একটি জাতি সত্বাকে চীরতরে মুছেফেলার ষড়যন্ত্র। উপস্থিত বক্তারা অত্যন্ত সুচারুভাবে হত্যাকান্ডের প্রেক্ষাপটের কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্র ও পরবর্তিতে তাদের আচরনের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। আগত শ্রোতারা অত্যন্ত ধর্য্য ও পিনপতন নীরবতার মাধ্যমে গভীর রাত ১২টা পর্যন্ত সপরিবারে বক্তাদের কথা মনোযোগের সাথে শুনেন এবং এই ধরনের অনুষ্টানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

সভায় বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি রাজনিতিবিদ মোরশেদ আলম, ফার্মাসিষ্ট আওয়াল সিদ্দিকী, সউদ চৌধুরী, নাসির আলী খান পল, রাজনিতিবিদ মুজিবুর রহমান, কমিউনিটি লিডার ফকরুল আলম, ডা. মাসুদুল হাসান, ছদরুন নুর, আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, সরাফ সরকার, ড. টমাস দুলু রায়, অধ্যাপিকা হোসনে আরা, রেজাউল করিম চৌধুরী, ওমর ফারুক খসরু, কৃষিবিদ আশরাফুজ্জামান, রাজনিতিবিদ দিলিপ নাথ, সাইফুল্লাহ ভুঁইয়া, মেজবাহ আহমেদ, মোর্শেদা জামান, ইফজল আহমেদ চৌধুরী, চিত্রা এষ, আলমগীর মোল্লা, আতিকুর রহমান, রোকাইয়া আক্তার, মোশারফ হোসেন ও অ্যাডভোকেট মামুন প্রমুখ। সভায় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন স্বপ্না খান, সাবুল উদ্দিন, সুজন রায়, আহনাফ আলম, কনক বড়ুয়া ও মীর শাহীন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here