কলিট তালুকদার, পাবনা প্রতিনিধি :: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পাবনায় নতুন করে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট ১০ জন মারা গেলেন। সেইসাথে রোববার নতুন করে জেলায় ১১০ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫৫৮ জনে।
মৃত দু’জন হলেন, পাবনা পৌর সদরের শালগাড়িয়া মহল্লার আইয়ুব আলী (৫৫) ও শিবরামপুর মহল্লার সালাউদ্দিন (৫৬)। তাঁরা দু’জন ব্যবসায়ী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আইয়ুব আলী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে এবং সালাউদ্দিন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুরে মারা গেছেন।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, সালাউদ্দিন বেশ কিছুদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ জুন তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে করোনা ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হন। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে রোববার দুপুরে তিনি মারা যান।
অন্যদিকে আইয়ুব আলী জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে ২৬ জুন তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকেলে তিনি মারা যান। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মৃত ব্যক্তিদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, জেলায় কোনো পিসিআর ল্যাব না থাকায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পিসিআর ল্যাবে জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ল্যাবে নমুনার চাপ বেশি থাকায় পরীক্ষার ফলাফল পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এ পর্যন্ত ৬ হাজার ১৩৮টি নমুনা দিয়ে ৬ হাজার ৭২টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। এ থেকে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫৮।
পাবনার সিভিল সার্জন ডাক্তার মেহেদী ইকবাল বলেন, মোট শনাক্ত বিবেচনায় জেলা সদর ও সুজানগর উপজেলাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করে প্রতিরোধমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪৯ জন সুস্থ হয়েছেন।
বর্তমানে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল করোনা ইউনিটে ১২ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। অন্যদের শরীরে তেমন কোনো উপসর্গ না থাকায় বাড়িতেই আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন গত ১৬ এপ্রিল। এরপর মে মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দেড় মাসে ৩৬ জন শনাক্ত হন। আর পুরো জুন মাস ও জুলাইয়ের প্রথম পাঁচদিন মিলিয়ে ৩৫ দিনে এই সংখ্যা ৫৫৮ জনে পৌঁছাল।