এদিকে পদ্মা নদীর ভাঙনের কারণে গত ৬ সেপ্টেম্বর দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাট নদীগর্ভে চলে যায়। ওই ফেরিঘাট প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাতটি ঘাট রয়েছে। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর ফেরিঘাট কয়েক বছর ধরে বিকল। চলতি মাসের ভাঙনে ৫ নম্বর ফেরিঘাট বিলীন হয়ে যাওয়ায় ওই ঘাটটিও বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ৩ নম্বর ফেরিঘাটের কিছু অংশ নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় ওই ঘাটটিও বন্ধ রয়েছে। সচল রয়েছে ৬ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট। জরুরিভাবে নদী শাসনের কাজ না করলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট নদীগর্ভে চলে যাবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের মধ্যে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটের কাছে তীব্র স্রোত থাকায় সব ঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে।
সিদ্দিক কাজী পাড়ার ছালাম শেখ বলেন, রাতে নিজ বসতবাড়িতে ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ মাঝরাতে শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, আমার রান্নাঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। তাড়াহুড়ো করে তখনই আমার বসতভিটা থেকে জিনিসপত্র বের করে আনি। বসতঘর ভেঙে অনত্র সরিয়ে আনি।
নদীভাঙন কবলিত স্থানীয় হান্নান শেখ জানান, বুধবার দিবাগত রাতে ভাঙনে পাঁচটি বসতঘর নদীগর্ভে চলে যায়। এছাড়া শতাধিক বসতভিটা রয়েছে ঝুঁকিতে। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই দৌলতদিয়ার ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। কারণ তারা শুকনো মৌসুমে নদী শাসনের কাজ না করে যখন ভাঙন দেখা দেয়, তখন জিও ব্যাগ ফেলে সাময়িক ভাঙন বন্ধ করে। কিন্তু এটাতো স্থায়ী সমাধান না।
স্থানীয় বাসিন্দা চান্দু মোল্লা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। আমি ছোট থেকেই ৫ নং ফেরিঘাট এলাকায় মাছের ব্যবসা করি। আমার জন্মের পর থেকেই দেখে আাসছি, প্রতি বছরই পদ্মার ভাঙনে দৌলতদিয়া ঘাট একটু একটু করে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আসলে কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই কালের পরিক্রমায় মানচিত্র থেকে দৌলতদিয়া ঘাট নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ’র) আরিচা বন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘নদীভাঙন প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ভাঙনের খবর শুনে আমরা ঘাট এলাকায় যাই। গিয়ে ভাঙনকবলিত স্থানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের পর্যাপ্ত বাজেট আছে। ভাঙন ঠেকাতে যত বালুভর্তি জিও ব্যাগ লাগে আমরা ফেলব। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি বন্ধ থাকা ৩ ও ৪ নম্বর ফেরিঘাট দুটি যত দ্রুত সম্ভব চালু করতে।