এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান : ৪দিনের টানা বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা বানের পানিতে বান্দরবান জেলা শহরের নিচু এলাকাসমুহ ৪/৫ ফুট এবং লামা উপজেলা সদর ৬/৭ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে রোবার সকালে। শনিবার রাতেই লামা উপজেলা সদর বানের পানিতে তলিয়ে যেতে শুরম্ন করে।
জেলা সদর সারাদেশ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রয়েছে শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে এখনও। জেলা সদরের সাথে লামা, থানছি, রুমা, রোয়াংছড়ি, আলীকদম এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সড়ক যোগযোাগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বানের পানি ও ব্যাপক পাহাড় ধসের কারণে। জেলায় কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে টানা ৪দিনের প্রবল বর্ষণে। এসব মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকটে চরম ভোগনিত্মর শিকার হচ্ছেন। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় এবং জেলা সদর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সংকট বিরাজ করছে। জেলা সদরে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি ঘটছে বলে জানান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বান্দরবান পৌর মেয়র জাবেদ রেজা রোববার সকালে জানান, শহরে ৯টি বন্যাআশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং এসব কেন্দ্রে শত শত পরিবার ইতিমধ্যেই আশ্রয় নিয়েছেন। তাদেরকে জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ খিচুড়ি খাবানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। মেয়র জানান, মাত্র ৪০দিনের ব্যবধানে আবারও ভয়াবহ বন্যার কারণে সর্বড়্গেত্রেই স্থবিরতা নেমেছে। জেলার ৭টি উপজেলার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানরা জানান, এবারের টানাবর্ষণে জেলায় শত শত পাহাড়ে ব্যাপক ধস নেমেছে। প্রাথমিক তথ্যে ৫শতাধিক বাড়ি বিধস্ত এবং ক্ষেত-খামারের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পাহাড়ধসের কারণে। পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা জানান, বান্দরবান জেলা কার্যত সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে টানাবর্ষণের ফলে। মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন টানাবর্ষণ অব্যাহত থাকায়। জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন এবং পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় বন্যাদুর্গতদের সহায়তাদানে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে জানানো হয়েছে। পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, বান্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা এবং ত্রাণ বিতরণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।