ঢাকে পড়বে কাঠি। বাজবে শঙ্খ। ঘণ্টা আর কাঁসর। উলুধ্বনিতে মুখরিত হবে চারপাশ। উৎসবের সাজে মন্ডপে মন্ডপে নামবে ভক্তদের ঢল। ধূপ-আগরবাতির গন্ধ মোহিত করে তুলবে পূজার আঙিনা। বর্ণিল সাজসজ্জা, হইচই আর মহা ধুমধামের যেন শেষ নেই। কারণ আজ সকালেই ষষ্ঠী পুজোর (বোধনের) মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব।
পাঁচ দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান এই ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গা জেলা এখন সাজসাজ রব। কেনাকাটার পর্ব শেষ। এখন অসামপ্রদায়িক চেতনায় গোটা বাঙালী সামিল হবে এ উৎসব উদযাপনে। রাত পোহালেই অর্থাৎ শনিবার সকাল থেকেই মহাসপ্তমী।
এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৮৭টি মন্ডপে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার সায়ংকালের বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গাকে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন পুজোমন্ডপে ষষ্টি পুজার আয়োজন করা হয়েছে। আজ দেবী দুর্গার বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরম্ন হবে শারদীয় দুর্গাপুজোর মূল আনুষ্ঠানিকতা।
চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার শ্রী শ্রী সার্ব্বজর্নীন দূর্গা মন্দিরের সাধারন সম্পাকদ কিংকর কুমার দে বলেন, দুর্গাপুজো শুধু হিন্দু সমপ্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি আজ সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের আর ৪টি উৎসবের মতো হিন্দু সমপ্রদায়ের শারদীয় দূর্গোৎসব একটি বৃহৎ উৎসব। সেখানে সকল সমপ্রদায়ের মানুষের আগমন ঘটে।
তিনি আরো বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার, রাষ্ট্র সকলের”
২৮ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দূর্গোৎসবের প্রস’তি। এবার দেবীর আগমন ঘটকে (ঘোড়াই), গমন ঘটকে। বাঙালীর দুয়ারে কড়া নাড়তে শুরু করে শারদীয় দুর্গোৎসব। হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ-শিশু-কিশোরদের প্রাণে এখন দুর্গোৎসবের আনন্দ শিহরণ। বাজনার তালে তালে বাজবে- “ঢাকের তালে কোমর দোলে/খুশিতে নাচে মন/আজ বাজা কাঁসর/জমা আসর/থাকবে ‘মা’ আর কতক্ষণ। তর সয় না আর যে আমার, ঢাকে কাঠি পড়বে আবার/আনব তোকে শাঁখ বাজিয়ে, বোধন হবে উলু দিয়ে/ঘুচিয়ে দে ‘মা’ আঁধার-কালো, সারাবছর দেখব আলো”-পুজোর আয়োজনে এই গানেরও কদর বেশ। ‘হাওয়ায় এখন পুজোর ঘ্রাণ’-এই গানের ভক্তেরও কমতি নেই।
আজ শুক্রবার (৭ অক্টোবর) ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও মহাষষ্ঠী বিহিত পুজো ও সায়ংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস, শনিবার (৮ অক্টোবর) মহাসপ্তমী বিহিত পুজো, দেবীর নব পত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও মহাসপ্তমী বিহিত পুজো। রবিবার (৯ অক্টোবর) মহাষ্টমী, কুমারী ও সন্ধিপুজো, সোমবার (১০ অক্টোবর) মহানবমী, মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ও বিজয়া দশমী বিহিত পুজোর মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে।