কলকাতা : নিউইয়র্কে ভারতের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানী খোবড়াগাড়ে ইস্যুতে একটা সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করলেন ভারতের বিদেমন্ত্রী সলমান খুরশিদ।
রবিবার নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে খুরশিদ বলেন ‘ কিছু একটা হবে’। পরক্ষণেই তিনি বলেন ‘বিশ্ব সামনের দিকে এগিয়ে চলে, বিশ্ব কখনও মারা যায়না, বিশ্ব কখনও থেমে থাকেনা, কিছু একটা হবেই’।
ভিসায় পরিচারিকার বেতন সংক্রান্ত তথ্যে ভুল সহ একাধিক অভিযোগে দেবযানীকে প্রকাশ্য রাস্তা দিয়ে হাত কড়া পরিয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। এমনকি তাঁকে নগ্ন করে তল্লাশি চালায় আমেরিকার পুলিশ। আইএফএস অফিসার দেবযানীর বিরুদ্ধে আমেরিকার এই অপমানের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে ভারত। কূটনীতিকে হেনস্থার প্রতিবাদে ন্যায়মার্গে মার্কিন দূতাবাসের সামনে থেকে নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কূটনৈতিক রক্ষাকবচ কেড়ে নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত। দেবযানীকে অপমানের প্রতিবাদে আমেরিকাকে ক্ষমা চাওয়ার দাবী জানানো হয় ভারতের তরফে। আমেরিকার তরফেও সাফ জানিয়ে দেওয়া ক্ষমা চাওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। ডেপুটি কনসাল জেনারেল পদাধিকারী হলেও ছাড় পাবেন না দেবযানী। এমনকী পরবর্তীতে ভারতীয় কূটনীতিক হিসেবে রাষ্ট্রপুঞ্জে দেবযানীকে স্থানান্তর করা হলেও আমেরিকার আইন অনুযায়ী তাঁর বিচার হবে। এমনকি মার্কিন আইন মেনেই দেবযানীকে বিবস্ত্র করে তল্লাশি চালানো হয়েছে বলেও জানানো হয়। সবমিলিয়ে দেবযানী ইস্যুতে গত কয়েকদিনে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে এসেছে শীতলতা। সেই শীতলতা কাটাতে নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে দুই দেশই। কিছুটা নরম মনোভাব নিয়েছে দুই দেশই।
শুক্রবারই ভারত-মার্কিন স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন দুই পক্ষকেই আলোচনায় বসে এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে হবে। খুরশিদের ওই বক্তব্যের একদিন পর শনিবারই মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছিলেন ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী। ভারতের কাছে এটা খুবই সংবেদনশীল বিষয়’। পারস্পরিক আলাপ আলোচনার মাধ্যেমই সেই সেই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে’।
এদিন জেন সাকি’র সেই বক্তব্যের প্ররিপ্রেক্ষিতে খুরশিদ বলেন ‘তারা (আমেরিকা) অবশ্যই কিছু একটা করবে, স্বাগত জানানোটাই সবকিছু নয়’।
আমেরিকাকে মূল্যবান অংশীদার বলে উল্লেখ করে খুরশিদ বলেন ‘দুই দেশেরই উচিত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করা’।
এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় মিশনে কাউন্সিলর পদে দেবযানীকে বদিল করতে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের রাষ্ট্রদূত অশোক মুখোপাধ্যায় এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান-কি-মুনের কাছে চিঠি লিখেছেন দেবযানীর বাবা উত্তম খোবড়াগাড়ে। চিঠিতে দেবযানীকে নতুন পদে নিয়োগ করে কূটনৈতিক আধিকারিকের রক্ষাকবচ দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।