hor‘লাইফ ওকে’র নতুন কমেডি শো ‘মজাক মজাক মে’। ফরম্যাটে আইপিএলের ছোঁয়া। বিচারকের আসনে হরভজন সিংহ। শুরু হয়ে গিয়েছে শো’য়ের শ্যুটিংও। তারই মাঝে মুম্বইয়ে হরভজনের সঙ্গে কথা বলে এলেন দেবমাল্য চক্রবর্তী।

ঘাঁটছিলেন দু’খানা আইফোন। কলকাতা থেকে আগমন শুনে জড়িয়ে ধরলেন হরভজন। যে লোকটাকে নিয়ে প্রায় সারাক্ষণই বিতর্ক। খেললেও, না খেললেও। বললেন, ‘আরে দাদা, আপ কলকত্তা সে আয়ে হো! কুছ লেঙ্গে?’ ট্র্যাকপ্যান্টস, পুলওভার পরা অফস্পিনারকে হাসিমুখে বিনয়ী ‘না’ করতে হল। অ্যাসাইনমেন্টে গিয়ে কিছু ‘নেওয়া’টা বিধেয় নয় কিনা!

আপনি দাদাকে (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন। আর ধোনিকে জানালেন না? আপনার টুইট নিয়ে তো কলকাতায় রীতিমতো তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে…!
(থামিয়ে দিয়ে) কোই ইয়ে তো নহি কহে রহা, ধোনি নে মুঝে উইশ নহি কিয়া? তাছাড়া টুইটার বা যে কোনও হ্যান্ডলই কিন্তু আপনি যে কথাগুলো বলতে চাইছেন, সেগুলো বলার মাধ্যম। আমি সেই লোকগুলোর একজন, যারা মনের কথা স্পষ্ট করে বলতে পছন্দ করে। আমি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে উইশ করতে চেয়েছিলাম। এবং আমার মনে হয়েছিল, হি ইজ দ্য বেস্ট ক্যাপ্টেন এভার! হোয়াট ইজ রং উইথ দ্যাট? সেটা তো একেবারেই আমার ব্যক্তিগত মত। আপনি সেটা মানতেও পারেন, না-ও মানতে পারেন!

আপনাকে তো আপনার ফলোয়ারেরা যা ইচ্ছে তাই বলছেন ওই টুইটের পর। খারাপ লাগে না? বিচলিত হন না?
কুছ লোগ মুঝে গালিয়া ভি দে রহে হোঙ্গে! সে সব টুইট ওরাই পড়ে বোধহয়। আমি অন্তত পড়ি না। বাকি রহি ধোনি কি বার্থডে কি, ধোনি কো ভি বধাইয়া ভাই! শুভেচ্ছা জানালাম কি না জানালাম, সে নিয়ে আমি তো অত ভাবি না।

ধোনির জন্মদিনটাও মনে রাখেন তাহলে?
ওটা এমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও তো নয়, যে মনে রাখতেই হবে! যেন নিজের বাচ্চার জন্মদিন, যে মনে রাখতে হবে!

ধোনির চেয়েও ধোনির ভক্তদের সমস্যাটা বেশি এ নিয়ে…।
একদমই। আমি নিশ্চিত, পুরো ব্যাপারটা নিয়ে ধোনির কিছু যায়-আসে না। ওর মাথাতেই আসবে না। ধোনি অ্যায়সা বান্দা হ্যায়, জো আপনা বার্থডে খুদ ভুল যাতা হ্যায়! এ সব বিষয়কে এতটা গুরুত্ব ও দেয়ই না। লোকজনের কাজই আসলে এই সব বলা। আমি তো জানি, বন্ধুদের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা কী রকম। সৌরভ থেকে শুরু করে ধোনি, রাহুল (দ্রাবিড়) কিংবা পাজির (সচিন তেন্ডুলকর) সঙ্গে  সম্পর্ক আর বোঝাপড়াটা কোন পর্যায়ের সেটা তো আমিই জানি ভাই! তাই লোকেরা কী বলল, না বলল তাতে রিঅ্যাক্ট করতে যাবই বা কেন! যদি আমার বন্ধুরা বলে, আরে তু নে উইশ নহি কিয়া বার্থডে পে, তব পুরা টোকরা কেয়া বড়ে বড়ে ট্রাক ভেজ দুঙ্গা কেক কে! বলব, সরি ভাই তোর খারাপ লেগেছিল। ধোনির জন্মদিনে উইশ করিনি বলছেন? সত্যিই হয়তো সেদিন ভুলে গিয়েছিলাম। আমি কোথায় আছি, সেটা তো ওই লোকগুলো জানে না। যাক গে, ছাড়ুন তো ও সব!

তাহলে শো’য়ের প্রসঙ্গে আসা যাক। ‘মজাক মজাক মে’র জন্য প্রস্তুতিটা কী রকম?
দেখুন এই শো’য়ের জন্য হোমওয়ার্ক করার প্রয়োজন ছিল না। কারণ মঞ্চে গিয়ে তো নাটক করছি না! পারফরম্যান্স দেখছি, কী হচ্ছে দেখছি, তারপর রিঅ্যাক্ট করছি। সামনেই পরীক্ষা হচ্ছে, সামনেই খাতা দেখা হচ্ছে। দুধ কা দুধ, পানি কা পানি হো রহা হ্যায়।

আপনার কোন ধরনের কমেডি পছন্দ?
যে কোনও ধরনের কমেডি, যাতে হাসি পায়। সেটা বাংলায় হতে পারে, গুজরাতি হতে পারে কিংবা জয়পুরি স্টাইলে। বন্দে কো হাসি আনি চাহিয়ে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, লোকে যেন বুঝতে পারে কমেডিগুলো।

শো’য়ের ফরম্যাটও অন্য রকমের। খানিকটা নাকি আইপিএলের মতো?
হ্যাঁ। বেশ আলাদা। পাঁচটা জোন রয়েছে। একই ধরনের দর্শক দেখবেন, সেই ব্যাপারটা ভাঙা হয়েছে এই শো’এ। গুজরাতের দর্শকও দেখুন, মহারাষ্ট্রের দর্শকও। দেশের আলাদা আলাদা অংশগুলোকে মিলিয়ে একটা মঞ্চে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। কোন জোনে কী ধরনের কমেডি হয়, সেটাও তুলে আনার চেষ্টা রয়েছে। গুজরাতের মানুষ তো জানেনই না মহারাষ্ট্রে কোন কোন বিষয় নিয়ে মজা করা হয়। সেগুলো জানতে পারবেন। দিস ইজ লাইক অ্যান আইপিএল। আন্তর্জাতিক প্লেয়ারের সঙ্গে ঘরোয়া প্লেয়ারকেও দেখতে পাবেন আর কী! অন্য শো’এ পাঁচজন কমেডিয়ান থাকেন, এখানে ২৫জন।

গীতা (বসরা, হরভজনের স্ত্রী) কি কোনও টিপ্‌স দিচ্ছেন শো’এ কী পরবেন, সে ব্যাপারে?
আর বলবেন না! সেদিন একটা ছবি হোয়াট্‌সঅ্যাপ করেছিলাম ওকে। জবাব এল, ‘ইয়ে কেয়া পহেন লিয়া তুমনে’! তবে ও খুব একটা নাক গলায় না শো’এ কী পরব না পরব, সেটা নিয়ে।

এই শো’এ আপনার ভূমিকাটা কি নির্বাচকের, নাকি কোচের?
ম্যায় কোচ তো নহি কর সকতা, না হি ম্যায় সিলেক্ট কর সকতা হুঁ! আমি একজন দর্শক। হু হ্যাজ আ বেটার সিট! আমি কমেন্ট করব পারফরম্যান্সের পর। তার সঙ্গে শোয়েব (আখতার) একমত হতেও পারেন, না-ও পারেন।

শোয়েব-হরভজন উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হবে তার মানে! পরিভাষায় যাকে ‘স্লেজিং’ বলে…।
আরে না না! ফ্যামিলি শো। গালিয়া-গুলিয়া কুছ নহি হোঙ্গে!

এটা মানা যাচ্ছে না। শোয়েব আখতারকে সুযোগ পেয়ে কিছুই বলবেন না ভাজ্জি? যতই সহ-বিচারক হোন আপনারা…।
শোয়েবের সঙ্গে ক্রিকেটের ময়দানে এক রকম সম্পর্ক, মাঠের বাইরে অন্য রকম। দু’টো সময়ই ভাল। যখন খেলতাম, সেই সময়ও। আবার একই মঞ্চে বিচারকের আসনে, তখনও। এবার দেখুন, যদি কথা কাটাকাটি হয়েই যায় তো হবে!

এখন তার মানে শত্রুতা ভুলে দু’জনে দু’জনের সান্নিধ্য উপভোগ করছেন?
হ্যাঁ! সুন উই উইল গেট ম্যারেড। সুন উই উইল হ্যাভ কিড্স (হাসি)।

নভজ্যোত সিংহ সিধুর মতোই হয়ে যাবেন না তো হরভজন সিংহও? সেই শেরো-শায়েরি…!
না না, ও সব আমার কাজ নয়। ওগুলো শেরি পাজি’র (সিধুর নতুন নামকরণ হয়েছিল শেরো-শায়েরি আমদানি করার পর) কাজ। আমার সিগনেচার স্টাইল তো জানেনই সকলে। টাংগ আড়াউঙ্গা সবকে কাম মে! যেখানে মনে হবে পা়ন্‌চ মারা যাবে, মারব। মারলে আবার চারটে খেতেও হবে! দেখেশুনে মারতে হবে আর কী!

এ দেশের কমেডিয়ানদের মধ্যে আপনার কাকে ভাল লাগে?
অনেকেই আছেন। একজনের নাম নিলে অন্যজনের খারাপ লাগবে। কপিল, গুত্থি, রাজুকে ভাল লাগে।

হলিউডে কাউকে ভাল লাগে না?
হলিউড মে! দাদা, পহেলে আপ বেঙ্গলি ফিল্ম করওয়ালো মুঝসে! সিধা হলিউড পে লেকে চলে গয়ে আপ!

টিম ইন্ডিয়ার কোচ হিসেবে অনিল কুম্বলের নির্বাচনটা কেমন লাগল?
কুম্বলে ইজ আ ভেরি গুড সিলেকশন। উনি এমন একটা লোক, যিনি ইন্ডিয়ান টিমকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। ইন্ডিয়ান ক্রিকেটকে অনেক কিছু শেখাবেন। কুম্বলে তো সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ওঁর ফার্স্ট প্রায়োরিটি বিদেশে গিয়ে ভাল খেলা। ম্যাচ জেতা। বাইরে যাওয়া মানে কিন্তু আমি জিম্বাবোয়ে কিংবা বাংলাদেশে গিয়ে জিতে আসার কথা বলছি না। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওদের মাটিতে হারিয়ে আসার কথা বলছি।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে রবি শাস্ত্রীর মন্তব্য এবং পাল্টা মন্তব্য সম্পর্কে আপনার কী মত?
দেখুন, পুরোটাই দু’জনের ব্যক্তিগত ব্যাপার। মাঝখানে আমি কিছু বললে সেটা ভাল দেখায় না। যদি অনিল কুম্বলে সম্পর্কে জিগ্যেস করেন তাহলে মতামত দিতে পারি। বলতে পারি, ইন্ডিয়ান টিমের পক্ষে এটা খুব ভাল পদক্ষেপ।

এখনও শোনা যায়, আপনি নাকি অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসকে খুব মিস্‌ করেন…।
(থামিয়ে দিয়ে) বললে বিশ্বাস করবেন না, জীবনে ওকে কতটা মিস্‌ করি! হাউ মাচ আই নিড হিম ইন মাই লাইফ! এভরি মর্নিং আই ওয়েক আপ, আই মিস্‌ হিম। রাত কো সোনে কে ওয়ক্ত ভি ইয়াদ আতি হ্যায়। বড়ি ইয়াদ আতি হ্যায় উসকি (হাসি)!

কলকাতায় আপনার ভক্তেরা বলাবলি করছেন, বিয়ের পর ভাজ্জি একটু বেশিই ‘কুল’ হয়ে গিয়েছেন যেন…!
কলকাত্তা সে মিঠাই আয়ি থি না শাদি মে! তারই এফেক্ট। সুইট হো গয়া হুঁ ম্যায় অওর ভি। কলকাতার রসগোল্লা হয়ে গিয়েছি!

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here