স্টাফ রিপোর্টার :: পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট গ্রামের এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার নেপথ্যের কিছু প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। ওই তথ্যে বলা হয়েছে পুরো ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে। আর পূর্ব শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছে দুই পরিবারের দুই শিশুর মধ্যে বিরোধ কেন্দ্র করে। যদিও সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিরোধের মিমাংসা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের যুবকরা সে সালিশ মানেনি। যার জের ধরে কয়েক যুবক ওই গৃহবধূকে ন্যাক্কারজনক ভাবে নির্যাতন ও গণধর্ষণ করে। থানায় দায়ের করা মামলায় পূর্ব শত্রুতার এ বিবরণ উঠে এসেছে।

পুলিশ এরইমধ্যে গণধর্ষণ ও নির্যাতন কান্ডে জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। অপর ধর্ষককে গ্রেফতারেও পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গণধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় শনিবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় এ মামলা রেকর্ড করা হয়। যার মামলা নম্বর-৬। গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হচ্ছে, চরমোন্তাজের চরমার্গারেট গ্রামের মজিবর শরিফের ছেলে শাকিল শরিফ (২২), চররুস্তম গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমান মুন্সীর ছেলে আল হাদি (২২) ও চরমার্গারেট গ্রামের আলাউদ্দিন চৌকিদারের ছেলে আরিফ চৌকিদার (২১)।

এদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত শাকিল ও আল হাদীকে পুলিশ ঘটনার রাতেই গ্রেফতার করে এবং রবিবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। অপর আসামি আরিফ এখনও পলাতক রয়েছে। পুলিশ তার সন্ধানে এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েছে। নির্মম ও পাশবিক এ ঘটনার নেপথ্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর (৩২) স্বামী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ঘটনার কয়েকদিন আগে অর্থাৎ গত ৩ অক্টোবর তার নয় বছরের ছেলে এবং আসামি শাকিলের আট বছরের ছোট ভাইর মধ্যে ঢিল ছোঁড়াছুঁড়ি কেন্দ্র করে মতবিরোধ হয়। এ দু’টি শিশু একই গ্রামের প্রায় পাশাপাশি ঘরের বাসিন্দা।

ঘটনার দিন শুক্রবার সকালে শিশুদের এ বিরোধের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে সালিশে মিমাংসা হয়। কিন্তু সালিশের সে সিদ্ধান্ত শাকিলের মনঃপুত হয়নি। শাকিল এনিয়ে দল বাঁধে।

এজাহারে বাদী আরও উল্লেখ করেন, শিশুদের বিরোধ কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার সৃষ্টি হয়। যার জেরে আসামি শাকিলসহ অন্যরা এদিন ১৬ অক্টোবর রাতে হঠাৎ ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীর হাত-মুখ ওড়না দিয়ে পেচিয়ে টেবিলের সঙ্গে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করে। নির্যাতনে তার বাম হাতের হাড় ভেঙ্গে যায়। একপর্যায়ে জোরপূর্বক আসামিরা পালাক্রমে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে।

পরে ঘরে থাকা দেড় লক্ষাধিক টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করে তাকে বেঁধে ফেলে রেখে যায়। ঘটনার পর বাড়ি গিয়ে হাত-মুখের বাঁধন খুলে স্ত্রীর কাছ থেকে এসব তথ্য জেনেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী। ঘটনার পর তার স্ত্রীকে প্রথমে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে গৃহবধূ ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলী আহম্মেদ জানান, দুই আসামিকে আদালতে সোপর্দ করলে জেলহাজতে পাঠানো হয়। বাকি এক আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here