ষ্টাফ রিপোর্টার ::প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকসহ ১০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে নিরাপত্তা দেবে সরকার। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, তাদের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব সরকারের।
ইতোমধ্যে হুমকিদাতাদের ধরার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। এর আগে গত বুধবার এদের হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দেয় আল কায়েদা-‘আনসারুল্লাহ বাংলাটিম : ১৩’। ইংরেজিতে লেখা ওই চিঠিতে ১০ জনের নামের একটি তালিকা রয়েছে, যার সবার ওপরে এইচটি ইমামের নাম।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাবেরী গায়েন, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার ও সাংসদ তারানা হালিমের নামও রয়েছে সেখানে।
চিঠিতে ১০ জনের নাম তুলে দিয়ে নিচে লেখা রয়েছে ‘মাস্ট ইউ উইল প্রিপেয়ার ফর ডেড’। তারপর রয়েছে ‘আল কায়েদা-আনসারুল্লাহ বাংলাটিম : ১৩’।
চিঠিতে ১০ জনের নাম তুলে দিয়ে নিচে লেখা রয়েছে ‘মাস্ট ইউ উইল প্রিপেয়ার ফর ডেড’। তারপর রয়েছে ‘আল কায়েদা-আনসারুল্লাহ বাংলাটিম : ১৩’।
তালিকায় এক নাম্বারে উপদেষ্টা এইচটি ইমামের নামের পাশে লেখা রয়েছে ‘এন্টি ইসলাম. অ্যাডভাইজার’। দুই নাম্বারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের নামের পাশে লেখা ‘আই. দুশমুন.ভিসি’। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে তারানা হালিম
(নাস্তিক), অসীম সরকার (হিন্দু মৌলবাদী), ইমরান এইচ সরকার (ব্লগার), কাবেরী গায়েন (আই.এনিমি.ডিইউ), বিকাশ সাহা (আই.দুশমুন), ইকবালুর রহিম (আই. দুশমুন), পলান সুতার (এন্টিবাংলাদেশ.র.অ্যাডভাইজার) ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের (সেক্যুলার) নাম।
পরে এ ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অসীম সরকার বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেছেন, ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, বিষয়টিকে তারা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। কারা এটি করেছে, সেটির একটি বিশেষ টিম নিয়োগ করে তদন্ত হওয়া দরকার। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করেছেন।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শুধু বিশিষ্টজন নয়, রাষ্ট্রের সব নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়াই তাদের দায়িত্ব। আর সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কারা এটি করছে সেটি অনুসন্ধান করে যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়, তাহলে এগুলো কমে যাবে।
এ বিষয়ে অসীম সরকার বলেন, ‘আমি শঙ্কায় আছি। বুধবার দুপুরের দিকে ডাকের মাধ্যমে একটি চিঠি আসে, সেখানে দশজনের একটি তালিকা করা হয়েছে। সেই তালিকায় আমার নাম চার নাম্বারে দেয়া হয়। আমাকে হিন্দু মৌলবাদী আখ্যায়িত করে লাল কালিতে চিহ্নিত করে হত্যার হুমকি দিয়েছে।’
এ বিষয়ে অসীম সরকার বলেন, ‘আমি শঙ্কায় আছি। বুধবার দুপুরের দিকে ডাকের মাধ্যমে একটি চিঠি আসে, সেখানে দশজনের একটি তালিকা করা হয়েছে। সেই তালিকায় আমার নাম চার নাম্বারে দেয়া হয়। আমাকে হিন্দু মৌলবাদী আখ্যায়িত করে লাল কালিতে চিহ্নিত করে হত্যার হুমকি দিয়েছে।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, নতুন করে হত্যার যে হুমকি দেয়া হয়েছে, এটি অত্যন্ত খারাপ সঙ্কেত। যদি তারা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকেন, তবে সরকার বিষয়টি আরো গুরুত্বসহকারে নেবে বলে তার বিশ্বাস।
জাফর ইকবাল আরো বলেন, ‘কারো কথা পছন্দ না হলে পাল্টা কথা বলা যেতে পারে, কারো লেখা পছন্দ না হলে পাল্টা কিছু লেখা যেতে পারে, কিন্তু আমাদের ধর্ম ও আইন এটা বলে না যে, মানুষ হত্যা করা যেতে পারে। কাজেই এ ধরনের হত্যার হুমকি আমাদের দেশের আইনের পরিপন্থী।’
তিনি বলেন, ‘গোপনে হুমকি দিতেই পারে, কিছুই করার নেই। কিন্তু এভাবে হুমকি দেয়ার সাহস হঠাৎ করেই যেন বেড়ে গেছে। আমি মনে করি, এতে করে আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর দায়িত্বও অনেক বেড়ে গেছে।’