সুপ্রিয় চাকমা শুভ :: এ বছরে ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ’র মাল্টা চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে উৎপাদিত মাল্টা দেখতে অনেকটা মিষ্টি লেবুর মত। তবে অন্যান্য জেলার চেয়ে রাঙ্গামাটির মাল্টা খুবই মিষ্টি ও সুস্বাধু। রাঙ্গামাটির মানিকছড়ির শুকরছড়ি, বোধিপুর বনবিহার সংলগ্ন এলাকার ৫০ একর জমিতে ৪০টি মাল্টা গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে। পাশাপাশি বাউকুল, আপেলকুল, আম্রপালিসহ ড্রাগন ফলে বেশ সাফল্য পেয়েছে ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। যা বারি মাল্টা চাষে হিল এগ্রিকালচার ক্রপ ইন্টেন্সিফিকেশন, কৃষি গভেষণা ফাউন্ডেশন (কেজিএফ) এর অর্থায়নে বাস্তবায়ন করেছে হাটহাজারী চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কৃষি গভেষণা ইনস্টিটিউট।
ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সংস্থার সূত্র জানায়, ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্থা। সংস্থাটি ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত করেন বোধিপুর বনবিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ জিনবোধি মহাথেরো। সংস্থাটি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ধর্মীয়, সামাজিক কাজের পাশাপাশি নিজ উদোগে বিভিন্ন ফল-ফলাদি চাষে সফলতা পেয়েছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও সংস্থারটির উদোগে ফল-ফলাদি উৎপাদনে বেশ সাফল্য পেয়েছে। ৫০ একর জমিতে ৪০ টি বারি মাল্টা গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে।
তবে বর্তমানে মাল্টার চাহিদা থাকাতে লাখের উপরে মাল্টা বিক্রি করার সম্ভাবনা আছে। পাশাপাশি বাউকুল ও আপেলকুল থেকে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার উপরে বিক্রি করা হয়েছে। আমচাষেও লাখ টাকার বিক্রি করা হয়েছে। এবছরে আম বিক্রি করে প্রায় ১ লাখ টাকার আম বিক্রি করা হয়েছে।
ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মঙ্গল বিকাশ চাকমা জানান, ২০১৫ সালে স্কুলে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হোই। তখন থেকেই ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সংস্থার সাথে জড়িত হোই। ২০১৫ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমার পড়ালেখাসহ যাবতীয় খরচ দিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি। সংস্থাটি যদি আমার পাশে না দাঁড়াতো তাহলে আমি বর্তমানে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজের মুখ দেখতে পেতাম না। বর্তমানে মঙ্গল বিকাশ চাকমা রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজে বিএ অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
সংস্থায় গুরিমালা চাকমা জানান, ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সংস্থাটি আমার জীবনে ভগবান হয়ে এসেছিলো। প্রতিমাসে পরিবারসহ আমার যাবতীয় খরচ সংস্থাটি দিয়ে যাচ্ছে। সংস্থা থেকে যা বেতন দেয় তা দিয়ে আমার পরিবার চলে। ত্রিশরণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে করা এবছরে মাল্টা চাষ,বাউকুল,আপেলকুল,আমও ড্রাগণ ফল চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছে।
ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পূর্ণচন্দ্র চাকমা জানান, অনন্যা বছরের তুলনায় এ বছরে মাল্টা চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন ফল-ফলাদির বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এর চেয়ে আরো উন্নতি হবে যদি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সংস্থাটির পাশে দাঁড়ায়। এবছরে মাল্টা গুলো লাখের উপরে বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সংস্থাটি যদিও বা ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্থা তার পাশাপাশি যারা গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থে আছে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করা অন্যতম লক্ষ্য।
রাঙ্গামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, রাঙ্গামাটিতে প্রতিবছর মাল্টা চাষে বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। রাঙ্গামাটির মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগী। যার কারণে প্রতি বছরে মাল্টা চাষে আগ্রহী হয় চাষীরা।