মাহফুজ মণ্ডল, উত্তরা, ঢাকা ::
ঢাকা উত্তরার পাশে টঙ্গির তুরাগ নদীর তীরে প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে ১৩ই জানুয়ারি’২৩ থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মুসল্লির স্বেচ্ছাশ্রমে প্রস্তুত হয়েছে ইজতেমার মাঠ। কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা মুসল্লি তারা থাকবেন টানা তিন দিন।
কনকনে শীত উপেক্ষা করে মুসল্লিরা প্রায় ৯৯ ভাগ কাজ সমাপ্ত করেছেন। ১৬০ একর জায়গা জুড়ে এই বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবারের মত সেনাবাহিনীর সদস্যরা তৈরি করছেন পন্টুন সেতু। যা দিয়ে সাময়িকভাবে মুসল্লিরা এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রস্তুতি হিসাবে যা লাগে তা সবেই হয়েছে। যেমন– খিত্তা ভিত্তিক মাইক বাঁধা, বৈদ্যুতিক তার, বাতি টানানো, ওজু-গোসলের হাউজ ও টয়লেটসহ প্রয়োজনী স্থান। বরাবরের মত বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা হিসেবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১২টি উৎপাদন নলকূপের মাধ্যমে ১২ কিলোমিটার পাইপলাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইজতেমা ময়দানের মুরব্বি মাহফুজুর রহমান বলেন, বিশ্ব ইজতেমার সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লিরা জেলাওয়ারি খিত্তায় অবস্থান করছেন। বরাবরের মতো এবারও উর্দু ভাষায় বয়ান করা হবে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ও আরবি ভাষায় তর্জমা করা হবে।
ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের সেবা দিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন ও শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের একাধিক টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ঢাকা থেকে এ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করবে। রোগী পরিবহনের জন্য সার্বক্ষণিক ১৪টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তায় ময়দান ঘিরে সাত হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ও বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তায় সাড়ে সাত হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার ও রুফটপ থেকে পুরো ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বিশেষ টিমসহ প্রতিটি খিত্তায় সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আরও জানান– ‘অন্য যে কোনও সময়ের থেকে এবার আরও সুশৃঙ্খলভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুই পর্বের ইজতেমা আয়োজকদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও ইজতেমা আয়োজনে কোনও বিশৃঙ্খলা হবে না।’
এবছরের বিশ্ব ইস্তেমা আগামী ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি প্রথম ধাপে এবং ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে।