কোম্পানীগঞ্জ: ডাক্তার ও নার্স বিহীন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে বর্হিবিভাগে আগত রোগীরা। দীর্ঘক্ষন অপেক্ষা করে ডাক্তারের দেখা না পেয়ে রোগীদের নিয়ে তাদের অভিভাবকরা ছুটতে হচ্ছে জেলা শহর অথবা প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতে। আবার অনেক ডাক্তার হাসপাতালে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে প্রাইভেট প্র্যাকটিসে চলে যাওয়ায় গ্রাম থেকে আসা অর্থনৈতিকভাবে অসস্বচ্ছল রোগীরা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্হিবিভাগে আগত রোগীদের ভোগান্তি সত্ত্বেও এটি তদারকি করার কেউ নেই। এছাড়া প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে ডাক্তারদের মধ্যে ব্যক্তিগত দ্বন্ধ থাকায় রোগীদের ভোগান্তি প্রকট আকার ধারন করেছে। এ সুযোগে বেড়ে গেছে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকের দালালদের দৌরাত্ম।
সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে ডাক্তারের মোট পদ ১৪টি। এদের মধ্যে ৪জন হাসপাতালে অনুপস্থিত ১জন ছুটিতে রয়েছেন।
হাসপাতালে ডাক্তারদের হাজিরা রেজিষ্ট্রার অনুযায়ী জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা মো: আনোয়ারম্নল আজিম ২৮জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত নৈর্বত্তিক ছটিতে গিয়ে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুপস্থিত রয়েছেন, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: অজয় মজুমদার ৩ জুলাইয়ের জন্য ছুটি নিয়ে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুপস্থিত রয়েছেন, গাইনী কনসালটেন্ট কামরুন নাহার ২ জুলাই ও ৩ জুলাইয়ের জন্য ছুটি নিয়ে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুপস্থিত রয়েছেন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা: কামরুজ্জমান ১৮ জুন থেকে ১৫দিনের শ্রান্তি বিনোদন ছুটি নিয়ে ৫ জুলাই পর্যন্ত অনুপস্থিত রয়েছেন। যদিও তাঁর ছুটি ২ জুলাইয়ে শেষ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র ডা: আলা উদ্দিন(এমওডিসি) রয়েছেন ছুটিতে। অবশিষ্ট ৯জন ডাক্তারের মধ্যে মাকসুদাহ আক্তার ও রওশন জাহান লাকীকে ১২টার পর হাসপাতালে পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা পাশ্ববর্তী দুটি প্রাইভেট ক্লিনিকে প্র্যাকটিস করছেন। যদিও সকাল নয়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ডক্তারদেরকে হাসপাতালে থাকার বিধান রয়েছে। এদিকে বর্হিবিভাগে শতাধিক রোগীকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে ৭জন ডাক্তারকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে।
চরকাঁকড়া থেকে আসা রোগী কহিনুর আক্তার জানান, আমি ২ ঘন্টা ধরে কামরুন নাহারের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু তিনি নেই। অসুস্থ্ শরীর নিয়ে এখন আমি গাইনি ডাক্তার কোথায় পাব বুঝতে পারছিনা।
অপরদিকে নাসের্র পদ ১৫টি থাকলেও নার্স আছে মাত্র ১০জন। এদের মধ্য থেকে সিনিয়র স্টাফ নার্স শিল্পী রানী নাথ ২ জুলাই থেকে ৬ মাসের ট্রেনিং-এ(এনটিসি) কক্সবাজার চলে যাওয়ায় বর্তমানে নার্স সংখ্যা ৯জন। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ৯জন নার্স তিন ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করতে হচ্ছে প্রতিদিন। যার ফলে ভর্তিকৃত রোগীরা যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অনেক রোগী জানান।
এ বিষয়ে স্বাস্থকর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দ্বায়িত্বে থাকা ডা: আবুল হাসেমের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
হাসান ইমাম রাসেল/