[author ]মুস্তাক মুহাম্মদ/ কেশবলাল রোড,যশোর[/author]

87bcdafd944ea“স্যার আমরা গরিব মানুষ। রাজমিস্ত্রি জোগালে দিয়ে- মেয়েটাকে নিয়ে কোনু রকম চলে। মেয়েটা আমার সম্বল।একটু ভালো করে দ্যাহেন ….. স্যার আমরা গ্রামের মানুষ,অনেক দূর থেকে আইছি , আপনে একটু দেখো স্যার….” কথাগুলো বলার সময় রহিলার কণ্ঠ ছিল কাঁপা কাঁপা আর কাকুতি-মিনতিতে ঠাসা ।মাতৃস্নেহ ভরা ছলছল দু’টি চোখে পানি কচুর পাতার উপরে টলমল জলের মত একটু বাতাস পেলে পড়ে যাবে। ডা. তমিজ মিয়া রাজবংসী কথাগুলো শোনার চেয়ে পাঁচ টাকার টিকিটে প্রেসক্রিবশন লেখার কাজে ব্যসত্ম বেশি।সকাল সাড়ে এগারোটায় সিরিয়াল একশো।আরও বাড়বে; সব একটার মধ্যে দেখতে হলে হর্সপাওয়ার গতিতে চলতে হবে।ফারিয়া কি সমস্যা? গলার সমস্যা প্রচ- ব্যথা ,শ্বাস নিতে কষ্ট হয়,দুর্গন্ধযুক্ত কফ হয়?

রহিলা বলল , মা ভালো করে সমস্যার কথা সব বল।ডাক্তার সাহেব ভালো করে দেখেন।ডাক্তারের হাতির কর্ণে কথাগুলো শ্রম্নতি সীমার(কুড়ি হার্জ) নিচে থেকে গেল।প্রেসক্রিবশন বাড়িয়ে দিয়ে  বললো,পনের দিন পরে আসেন।

ওষুদ খাওয়ার পর গলার ব্যথা আরও বেড়ে গেল । শা্বাস- নিঃশ্বাস নিতে  আরও কষ্ট।ওষুধের (ফার্মেসি) দোকানের ডাক্তার জিজ্ঞাসা করল, এত হাই পাওয়ারের ওষুধ কাকে খাওয়াবে,মেয়েকে!কথাটা ভয়ে ভয়ে বলল একুব আলি।চুপ করে হাই পাওয়ারের ওষুদ খাবা।এরাম হতি পারে।এমবিবিএস ডাক্তার ,আমাদের থেকে কম বোঝে ? খাবা ।

রহিলা খাওয়াতে কিছুতেই রাজি না।আমার একটা মাত্র মেয়ি,তুমি চুপ করো , কিছু হয়ে গেলে আমি মনরে বুঝ দিতে পারবো না। ডাক্তার ব্যসত্মতার জন্য ভুল ওষুদ দেছে।

বিটি চুপ কর ,ডাক্তার ভুল ওষুদ দেছে,তারা গু খেয়ে লেকাপড়া শিখেছে।আমাদের মত খেড়িখোদা বকসো ,এত বুঝিজ তা মাগী তুই ওষুধ দিতে পারলি নি ? ডাক্তারের কাছে গেলি কেন? রাগে গজগজ করতে করতে বাজারের প্যাকেট ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাজারের দিকে যেতে যেতে একুব বললো ,মাগী তোর মেয়ে তুই দেখ।আমি এর ধার ধারি না।

রহিলা রাগে গালিগালাজ করতে থাকে।ভাড়ানির ছেলির সাথে বিয়ে করে জীবনটা জ্বলে গেলো। আমারে দেই গালাগালি।মেয়িটা আমার গলার যন্ত্রণায় মরে যাচ্ছে,কিছু খাতি পারছেনা।আজ কদিন না খেয়ি মেয়িটা আমার শুকোয় যাচ্ছে ,আর নাড়ের ছেলি আমারে দেই গালি।রাগ দেখানোর আর জাগা পায় না। বেটা তোর ঐ বউয়ের কাছে গে পদ্দারী কর।পারিস নি? তোর মাগীর সাথে,আমার সাথে ক্যান ! আমার একটা মেয়ি, তার প্রতি তোর কোনো খ্যেল নেই।মেয়িটা গেলে আমি কার নিয়ে থাকব ।স্বগোক্তি করে রহিলা।

চলো মা, আজ আবার আব্দুর রফু ডাক্তারের বাড়িতে, হাড়ের ডাক্তার ,তাও তোকে নিয়ে যাবো।ত্যানি তো উকিনি চাকরি করে।একটু ধরাচরা থাকলে সহজে কাজ হবে।মামু কালু থাকলে কাজ হয়।মামু কালু ছাড়া কেউ কাজ করে না।হয় মেলা মেলা করে  লেহাপড়া করে বড়ো বড়ো দালানে চাকরী করতি হবে, তা না হলি গুন্ডা হতি হবে।কাজ… আননে হয়ি যাবে।মামুদের কলমের মার দুনিয়ার বার।ধরতি পারবা না।সাংগাতিক মার।গত তিন সপ্তা তো ওষুদ পাল্টে দিচ্ছে। মেয়েটা আমার হাই পাওয়ারের ওষুদ খাতি খাতি শুকোয় যাচ্ছে।সিরিয়াল দিতে হবে।সকাল আটটায় যাচ্ছি আর আসতে দুকুর হয়ি যাবে। তবু ভালো, ডাক্তার প্রতিমাসের প্রথম বুধবার রোগী দেখে ।দুকুুরে খিচুরী খাতি দেয়।সুলতাননগর জেলার সবচেয়ে বড় হাড়ের ডাক্তার । সুলতাননগরে তার ন্যাজের কিস্ননিক।জিলার সবচেয়ে বড় হাড়ের ডাক্তারখানা।কোটি কোটি টাকার ব্যাপার।ওনার বড় ভাই প্রিন্সিপাল সাহেবের বাড়িতে বাপের নামে‘ মাসিক হাসপাতাল’ খুলে বিনা পয়সায় রোগী দেখে।আমরা তার গ্রামের মানুষ।আমি এক সময় ওনার মার কাজ করে দিতাম ,আমারে উনি চেনে।

চলো মা বাড়ি চলো,এবার সপ্তায় তমিজ রাজবংসী ডাক্তার সাহেবের সাথে ডাক্তার রফু বলে দেবে।তাতে একটা ভালো ব্যবস্থা হবে । আমাদের গ্রামের ডাক্তার ,কাজ তো হবেই।চল তাড়াতাড়ি বাড়ি চল , আবার রাদতে হবে।না হলে বেটা এসে রেগে যাবে। যত মরণ সব আমার। আমার মরণ হলেই সব ঝামেলা মিটে যেতো।

মা আজ সিরিয়াল কত? কতো রোগী। তুই একটু শুনে আই না, কতো পরে সিরিয়াল?

মা সিরিয়াল প্রায় নব্বই। এত সময় মত ডাক্তার থাকলে পনচাস/ষাটজন রোগী দেখা হয়ি যেতো । দেখো এখন সকাল সাড়ে এগারোটা; নটায় অফিস,যদি আসতো রোগীর ভিড় কি থাকতো।এর নাম বাংলাদেশ! কোনো নিয়মের বালাই নেই। আবার নোক দেখানো কাগুজে কলমের হিসিবি ফিরিসতাও ইদির সাতে পারবে না।এখন আলস্নায় জানে কখন ডাক্তার আসে। এসে তো আবার একটার(সময়) বেশি রোগী দেখবে না । দেড় ঘণ্টারও কম সময়ে একশোর বেশি রোগী দেখবে। রোগী আর কি দেখবে!  কথা কওয়ার সময়ই পাওয়া যায় না।আকাশের তারা গুণার মত।এক নজরে দেখে বলতে হয় অনেক তারা।

মা, ঐ যে ডাক্তার আইছে।চলো রফু কাকাকে ডেকে আনি।চল বলে মায়ে ঝিয়ে রফু ডাক্তারের ২১০ নং রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।একজন অল্প বয়স্ক নার্স বলল ,এখানে কি ? নিচে রোগী দেখা হয়। স্যার আজকে রোগী দেখবেন না। আজকে ওঁনার ক্লাস আছে। উনি সুলতানপুর সদর হাসপাতালের সিনিয়ার প্রফেসার। ফারিয়া বললো,আমরা স্যারের গ্রামের নোক ।উনি আসতে বলেছিল।আমরা নাক-কানের ডাক্তারকে দেখাবো। আচ্ছা যান,বলে নার্সটি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে চলে গেলো।

স্যার আসতে পারি বলে রোগীর ভিড় ঠেলে রহিলাদের নিয়ে ডা. রফু ভেতরে ঢুকে গেলেন । খুব খাতির যত্ন করে বসতে দিলেন। ডাক্তার রফু সাহেব কি যেনো আলাপ করে রহিলাদের বসতে বলে চলে গেলেন।একটু পরে আমাদের ডাক হল । ডাক্তারের সাথে কিছু কথা আজ যেনো বলা গেল । উনি মনোযোগ দিয়ে আমাদের সব কথা শুনে বলল, আগামী রবিবার ঢাকা থেকে বড় ডাক্তার আসবে ,আপনি আসেন।ডাক্তার যদি বলে অপারেশন করতে হবে করে দেবে।

রহিলারা বাইরে বের হয়ে আসছে ,এই সময় একটি পাতলা ধরনের গেঞ্জি পরা ছেলে বললো,দেখি আপনার রিপোট,

ও গলার সমস্যা ,অপারেশন করা লাগবে ।এখানে হবে না।সামনে চলুন নিউ একতা হসপিটালেতো বড় ডাক্তার আছে।এই ডাক্তারের দেখাতে চাইলে প্রাইভেট ভাবে দেখাতে হবে।ওখানে ইনি প্রাইভেট ভাবে রোগী দেখেন।সকালে একবার দেখে গেছে। আর দুপুর থেকে রাত পর্যনত্ম চেম্বারে রোগী দেখেন।এখানে কি মানুষের চিকিৎসা হয়। পরীড়্গার যন্ত্রপাতি সব নষ্ট।যন্ত্রপাতি আছে কিন্তু তা সব ডাক্তরেরা নষ্ট করে ফেলেছে।না করলে তাদের কিলিনিকে কেউ যাবে না।আয় কমে যাবে।পারসেন্টেন পাবে না। লস না, এই জন্য এই সব যন্ত্রপাতি ভাল থাকে না।আর বারো জনের কাজ কত আর ভাল থাকে।যা দুই একটা ভাল আছে তাতে রিপোট ভাল আসে না।আর ডাক্তারের রোগী দেখার সময় নেই।কত রোগী দেখবে।রোগঢী দেখে মনে হয় গোটা দেশ রোগী। একটি মানুষও ভাল নেই।এখানে অপারেশন করলে রোগ ভালো হবে না। ডাক্তাররা কি সেই ভাবে অপারেশন করে……. সময় কোথায় এত রোগী ,চলুন আমার সাথে। রহিলা প্রশ্ন করল,তা স্যার কত লাগতি পারে? দুটো পয়সা গেলেও মেয়ে সুস্থ্য হয়ি যাবে আমি তাই চাই। আমার মেয়ি আগে না পয়সা আগে?

দালাল বলল, আমি বলে কম করে  দেবো ,কোনো চিন্তা আপনার করা লাগবে না।আমাদের খুব পরিচিত ডাক্তার। আপনার জন্য আমি বলে দেবো।আমার আর কি উপকার। আমার জন্য যদি আপনাদের একটু উপকার হয়।মানুষ মানুষের জন্য। তাছাড়া আপনার মেয়েটা তো আমার ছোড বোনের মত। তাই না? চলেন এই এ্যামবুলেস্নগুলো পার হলেই কিলিনিক, চলেন।

হাসপাতাল ক্যাম্পাসে দালাল বিড়ম্বনা এত বেশি যে ফাঁদে পড়তো সময় লাগে না।সহজে মানুষ তাদের শিকারে পরিণত হয়।সরকারি হাসপাতালের আর এক বিড়ম্বনা কিলিনিকের এ্যাম্বুলেস্ন। কিলিনিকের এ্যাম্বুলেস্নগুলোর সারি দেখলে মনে হয় এ্যাম্বুলেস্ন স্টান্ড।পাশে দুই একটা সরকারি  এ্যাম্বুলেস্নের গাড়ি পড়ে থাকে। তাতে যা মূল্যবান তা আগেই হাওয়া হয়ে যায়।ড্রাইভার খুলে বেঁচে দেয়। আর যা দু একটা থাকে তা ছিচকে চোর গাঁজাখোর টোকাইরা খুলে বিক্রি করে দেয়। শুধু উপড়ের টিনের কাঠামো পড়ে থাকে।সরকারি সম্পদ পচে গলে খসে যাবে। হাত দেওয়া যাবে না।আর কর্তারা যখন হাত দেবে অকশানে বিক্রি করে দু’চার পয়সা কাজে লাগায়ে বাকিটা দিয়ে নিজ থলে গরম করবে।বাংলাদেশ !

আপনি স্যার যান,আমরা ডাক্তার রফুর কাছে যাবো।তখন লোকটি আস্তে আস্তে সরে গেলো।

রোববার সকালে আবার আসলো রহিলারা।আজ ঢাকার ডাক্তার এসেছেন। সকাল দশটা; রোগীর তেমন ভিড় নেই। আজ ডাক্তার সময় মত এসেছে ।সিস্নপ জমা করার পরপরই আমাদের ডাক আসল। আগের প্রেসক্রিবশন দেখে বড় ডাক্তার রেগে গেলেন।বড় ডাক্তার বললেন, আপনি(ডা. তমিজ) তো রোগী মেরে ফেলতেন ।এতটুকু বাচ্চার কেউ এত হাই পাওয়ারের ঔষধ দেয়! রোগী দেখেন , না কি করেন!  আরও অনেক কথা । দুটো পরীক্ষা দিয়ে তিনি বললেন ,তোমরা পরীড়্গা করে  আগামী সপ্তাহ ইনাকে দেখাবে । আর কিছু ঔষুধ  লিখে দিলাম খাওয়াবে।

রহিলারা ডাক্তার রফুর কাছে গেলো। উনি বললেন ,গেট দিয়ে বের হয়ে সামনে দশতলা বিল্ডিঙে ল্যাব সেবা হাসপাতাল ,ঐখানে গিয়ে এই সিস্নপটা দেখালে দুই হাজার টাকার পরীক্ষা আট শত টাকায় করে দেবে ।আবার রিপোর্ট আমার দেখাবে,কেমন।যাও আগে পরীড়্গা করে আসো।

পরীক্ষার রিপোট এক সপ্তা পরে নিয়ে রফু সাহেবরে দেখালো রহিলা। উনি আর একটা স্লিপ দিয়ে তমিজ সাহেবের কাছে পাঠায়ে দিলেন।।তমিজ ডাক্তার রেগে আগুন।পরীক্ষা কেনো উনার দেখানো হাসপাতাল থেকে করি নি। টিকিট ছুড়ে ফেলে দিয়ে বললেন ,আমি পারবো না । অন্য জায়গায় যান।পরীক্ষা করাবে অন্য জায়গায় আর রোগী দেখতে হবে আমার।সব বেশি বোঝে। যত সব । আমার উপর দিয়ে যায়।যান যান বের হয়ে যান । কান্তে কান্তে রহিলা বাইরে চলে আসলো।!

মানুষ এতো নিষ্ঠুর হয়। আগে জানতাম না । আমার মেয়ি যন্ত্রণায় ভুগছে আর উনি আমাকে নিয়ে খেলা করছে।উনাদের জীবন নেই । মেয়ে- ছেলে নেই।আল্লা তুমি এর বিচার কর, আলস্না তুমি বিচার কর! গরীবের তুমি আছো।

সেই স্যারকে(দালাল) আবার দেখলাম। পাশে এসে বলল,চলেন আমার সাথে, আজ আপনার ভাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো। কোনো গতি না পেয়ে তার সাথে গেলো রহিলারা।ডাক্তার সালেহ আহমেদ সবকিছু দেখে তিনটা পরীক্ষা দিল- বুক ,রক্ত আর প্রসব।গলার সাথে এগুলোর কি সম্পর্ক ডাক্তারের কাছে জানতে চেয়েছিলো রহিলা। উনি বললেন,পরীক্ষা ছাড়া আমি রোগীর অপারেশন করতে পারবো না।জটিল অপারেশন।আর এই চেম্বারে অপারেশন হবে না । নির্মূলকেয়ার হাসপাতালে অপারেশন হবে।পনের হাজার টাকা আমার, দুই দিনের বেড ভাড়া চার হাজার আর ঔষধ, সব মিলিয়ে তেইশ হাজার টাকা খরচ হবে।রহিলা কাদো কাদো গলায় বলল ,স্যার আমি গরিব মানুষ ,একটু কম নেন।স্যার!

তিনি বললেন, আচ্ছা আমাকে আপনি কম দিয়েন।তিন হাজার টাকা।রহিলা আর কিছু বলতে পারলো না।একটা ছেলে এসে পরীক্ষা করতে নিয়ে গেল।রক্ত প্রসব আর বুকের পরীড়্গা করে আমাদেন বলল ,তিন হাজার টাকা দেন।ঐ জায়গায় জমা করে আসেন। রহিলা বলল, আমার কাছে তিন হাজার থেকে দুশো টাকা কম আছে ,আমার কাছে মাত্র দুশো টাকা আছে বাড়ি যাবাার জন্নি।লোকটি টাকা জমা করে একটা কাগজ হাতে ধরায় দিয়ে বললো, হাসপাতাল মালিকের মায়ের মৃত্যু বার্ষিকী তাই কম নেছে দুই শো টাকা।বাড়ি গিয়ে বিশ হাজার টাকা জোগাড় করে আনেন । রবিবার অপারেশন।সকালে প্রথম আপনাদের অপারেশন হবে।

তিন বছর পুষে – পাঁচ মাস হল একটা এড়ে বাছুর পেয়েছে।রহিলা বলল, মনে করেছিলাম বাছুর ব্যচে মেয়ে বিয়ে দেবো।কিন্তু কপাল আমার !গুষ্টি মারো কপালের! তা মতিন ভাই কত দেবে ছাব্বিশ হাজার? আর পাঁচশো টাকা ভাগ্নে কে দিয়ে যা ।।আমার বিপদ না হলে কি বেচতাম। আমার তো একটা মেয়ে ,ওকে সুস্থ্য হাসি খুশি দেখতে চাই….. নে বাছুরের দড়ি ধর … দড়ি দিতে গিয়ে রহিলার চোখের দুফোটা পানি দড়িতে পড়লো……….

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here