ঠাকুরগাঁওয়ে বিরল প্রজাতির একটি শকুন আটক করে একটি ঘরে বন্দি রেখেছে স্থানীয় এক হোটেল শ্রমিক। আহাড়ের অভাবে পাখিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিরল এই পাখিটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত দর্শনার্থী সেখানে জড়ো হচ্ছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চব্বিশ টিউবওয়েল এলাকায় সরকারি সেগুনবাগান থেকে হোটেল শ্রমিক রেজাউল করিম ও বেলাল ওই শকুনটিকে আটক করে।

রেজাউল করিম জানায়, সকালে তার বাড়ির পাশে বনবিভাগের সেগুনবাগানের দুটি গাছের উপর দুটি বড় আকারের পাখি দেখতে পান তিনি। এরপর তিনি রাতচোরা পাখি মনে করে আস্তে আস্তে ওই গাছে ওঠেন এবং একটি শকুনের ডানা জাপটে ধরেন। কিন্তু তিনি একাই পাখিটি সামলাতে পারছিলেন না। ওই সময় তার প্রতিবেশী বেলালকে ডেকে নেন। বেলালও গাছে ওঠে একটি রশি নিয়ে। এরপর রশি দিয়ে পাখিটির পা দুটো বেঁধে নিচে নামান। ওই সময় পাশের গাছে থাকা অপর পাখিটি ভয়ে উড়ে যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এক নজর আটক পাখিটি দেখতে সেখানে শতশত নারী পুরুষ ছুটে যায়। পাখিটি দেখতে আসা ফয়জুল ইসলাম বলেন, এটি সংরক্ষণ করা না হলে যে কোন সময় মারা যেতে পারে। আয়শা খাতুন বলেন, পাখিটির কথা শুনে তিনি দেখতে এসেছেন। তার ৩৫ বছর বয়সে এমন বড় পাখি এতো কাছ থেকে কখনো দেখেননি। আরেক দর্শনার্থী মনিরুল ইমলাম, পাখিটি এভাবে ধরা উচিৎ হয়নি বলে মন্তব্য করেন। তিনি এটিকে মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেয়া বা চিড়িয়াখানায় সংরক্ষণের দাবি জানান।

এদিকে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও রেজাউল পাখিটির আহার জোগাড় করতে পারেননি। ফলে দীর্ঘক্ষণ না খেতে পেরে পাখিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। পাখিটিকে বাঁচারে রেজাউল সরকারি সহায়তা চেয়েছেন। পাখিটি রেজাউলের জীর্নকুঠিরের অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষে বন্দি রয়েছে। তার পায়ে মজবুত রশি পড়ানো রয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোছাদ্দিকুর রহমান বলেন, এধরনের শকুন দেশের চিড়িয়াখানায় অনেক আছে। পাখিটির চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সুস্থ হয়ে উঠলে পাখিটি ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে এলাকাবাসীকে ।

উল্লেখ্য এবছরের এপ্রিল মাসে সদর উপজেলার বান্দিগড় সরকার পাড়া গ্রামে এ ধরণের আরো একটি বিরল প্রজাতির প্রাণী পাওয়া যায়। ৪দিন ওই এলাকায় থাকার পর সুস্থ হয়ে উড়ে যায়।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/তানিয়া সরকার/ঠাকুরগাঁও।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here