ডেস্ক রিপোর্ট:: মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে গত বছরের নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর প্রচেষ্টায় খুব সম্ভবত অনুমোদন দিয়েছিলেন।

মার্কিন সরকারের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে ‘বিভ্রান্তিমূলক কিংবা ভিত্তিহীন অভিযোগ’ ছড়িয়েছিল মস্কো। তবে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলে বিদেশি কোনো সরকারের হাত ছিল না বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়। যদিও মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপের এসব অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করেছে রাশিয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালকের কার্যালয় থেকে গতকাল মঙ্গলবার ১৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে একে রাশিয়া ও ইরানের ‘প্রভাব খাটানোর অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, রাশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের আগে আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়িয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনি প্রক্রিয়া থেকে আস্থা হ্রাসের জন্য গুজব ছড়াতে প্রচারণাও চালানো হয়।

মার্কিন প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা গণমাধ্যম, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ট্রাম্পের মিত্রদের কাছে বাইডেনবিরোধী বক্তব্য ছড়িয়েছে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করেন জো বাইডেন এবং গত ২০ জানুয়ারি বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণ করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, রাশিয়া যখন ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত করতে কাজ করছিল, ইরান তখন তাঁর সমর্থন দুর্বল করতে ‘বহুমাত্রিক গোপন প্রভাব প্রচারণার’ কাজ করছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি অনুসরণ, ক্ষতিকর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন এবং দুদেশের মধ্যে বাগ্‌যুদ্ধের সূত্রপাত করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সাইবার গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ করে এলেও ‘অত্যন্ত দৃঢ় বিশ্বাসের’ সঙ্গে মার্কিন প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয় যে, ভোটের আগে দেশটি কোনো ধরনের ‘প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা চালায়নি’।

এতে বলা হয়, ‘চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে স্থিতিশীলতা চায়। আর তাই নির্বাচনের ফল যাই হোক না কেন, সেটি প্রভাব বিস্তারের ঝুঁকির বিপরীতে সুবিধাজনক নয় বলে বিবেচনা করেছে।’

মার্কিন প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং চূড়ান্ত ফল—কোনটিই বিদেশি রাষ্ট্র দ্বারা প্রভাবিত হয়নি।

এই প্রতিবেদনটি এমন এক সময় প্রকাশিত হলো যখন দেশটির বিচার বিভাগ ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের যৌথ তদন্তের ফলও একই রকম পাওয়ার কথা জানানো হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘রাশিয়া ও ইরানের প্রচারণা কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে টার্গেট করেছিল, যার ফলে এমন কিছু নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছিল যেগুলো নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজ করেছিল।’

তবে প্রতিবেদনে বলা হয় যে, প্রভাব বিস্তার করার এসব প্রচেষ্টার সবই ছিল পরোক্ষ।

নথিগুলোতে বলা হয়, ‘ভোট প্রক্রিয়ার কোনো কারিগরি বিষয় বদলে ফেলে ভোটার নিবন্ধন, ব্যালটে ভোটদান, ভোট গণনা কিংবা ফল ঘোষণা—কোনো বিষয়েই বিদেশি কোনো শক্তি হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছিল এমন কোনো ইঙ্গিত আমাদের কাছে নেই…।’

গত বছরের আগস্টে মার্কিন গোয়েন্দা কমিউনিটি বলেছিল যে, চীন, রাশিয়া ও ইরান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে।

তদন্তে উঠে আসে যে, রাশিয়া জো বাইডেনকে ‘অপদস্ত’ করতে চাইছিল। আর, চীন ও ইরান ট্রাম্পের পরাজয় চেয়েছিল।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here