ঢাকা: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধে অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। কাঁচাবাজার মধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে। এতে বাজারে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।
রাজধানীর কাওরানবাজার, হাতিরপুল, শান্তিনগর, সেগুন বাগিচার খুরচা ও পাইকারী বাজার ঘুরে দামের এই ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
সবজি ব্যবসায়ী আবদুল বারেক বলেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজির সরবরাহ কম। এজন্য দাম বেশি। বিরোধী দলের অবরোধে ঢাকায় সবজির গাড়ি ঢুকতে পারছে না।
তিনি বলেন, এখন সবজির শীত মৌসুম। দাম কম হওয়ার কথা। সেখানে রাজনীতির কারণে ঘটছে উল্টো।
হাতিরপুলে বাজার করতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা মধ্যবিত্তরা বাজার করতে এসে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছি। বাজারে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সাত দিনের বাজেটে দুদিনই চলছে না।
কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দর। কোনো কোনো পণ্য ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজারে প্রতিকেজি শসা ৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৯০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, গোল বেগুন ৭০ টাকা, শিম ৬০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, আলু ২৪ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, কচুর লতি ৪৫ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, টমেটো ৯০ টাকা, ওলকপি ৫০ টাকা, শাল গম ৫০ ও চিচিঙ্গা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি পিস ফুলকপি ৪৫ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ থেকে ৯০ টাকা ও লাউ ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতিহালি কাঁচকলা ২৫ টাকা ও লেবু ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে লালশাক, কলমি শাক, লাউ শাক, পালং শাক, মুলা শাক, পুঁই শাক, ডাটা শাকসহ নানা ধরনের শাকের আটি ১০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পুদিনা পাতা ১০০ গ্রাম ৩০ টাকা, ধনেপাতা প্রতি ১০০ গ্রাম ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অবরোধের আগে এসব শাকের আটি ছিল ৬ থেকে ৮ টাকা।
এদিকে, আবারো সেঞ্চুরি পার করেছে পেঁয়াজের দাম। মাঝে কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর রাজধানীতে আবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি।
বাজারে প্রতি হালি লেয়ার মুরগির লাল ও সাদা ডিম ২৮ টাকা, হাঁসের ডিম ৪০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির ডিম ৪০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে আজ ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের বেশি প্রতিহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এক কেজি ওজনের বেশি ইলিশের পিস ৬০০ টাকা ও প্রতিকেজি জাটকা ৩০০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ টাকা, রুই মাছ ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ টাকা, চিংড়ি (বড়) ১ হাজার ২০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ টাকা, দেশি কৈ ৩০০ টাকা, টাকি ১৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০ টাকা,শোল মাছ ৬৫০, মলাঢেলা ২০০ টাকা, বাইলা মাছ ৫৫০ টাকা, কাচকি মাছ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে গরুর মাংস ২৮০ টাকা ও খাসি ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের প্রতিটি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৫০ টাকা, হাঁস ৩০০ টাকা দরে।
টানা অবরোধে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে চালের বাজার। প্রতি কেজি চালে ২-৩ টাকা বেড়েছে। আমন ধানের মৌসুম হলেও অবরোধে উত্তর বঙ্গসহ বিভিন্ন স্থানের চাল না রাজধানীতে না আসায় দাম বেড়েছে বলে জানালেন কাওরানবাজারের চাল বিক্রতা আবু নাসের।
প্রতিকেজি নাজিরশাইল ৫৮ টাকা, মিনিকেট ৪৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫১ টাকা, লতা আটাশ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, মোটা চাল ৪২ টাকায়, জিরা নাজির ৫৫ টাকা, আটাশ ৪২ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, পারিজা ৩৮ টাকা, বিআর-২৮ ৪০ থেকে ৪২ টাকা, বিআর-২৯ ৪০ টাকা, হাসকি ৪০ টাকা, স্বর্ণা ৩৬ টাকা থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।