এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি :: গত দুইদিনের টানা ভারী বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে বান্দরবান জেলা শহর, লামা ও আলীকদন উপজেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্ট বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লামা,আলীকদম এবং রুমা উপজেলা সদরের সাথে জেলা সদরের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সোমবার সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে। পাহাড়ের অংশ ধসের আংশংখায় জেলা সদর, লামা, আলীকদম, রুমা, রোয়াংছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং থানচি উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার পরিবার মহাশংখায় দিনকাটাচ্ছেন।
বৃষ্টির পানি ও বানের পানিতে জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে প্রায় ২০ হাজার লোক পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। জেলা প্রশাসনসহ এসব উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাবার জন্যে মাইকিং করা হয়েছে সোমবার।
সরকারি সূত্র জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে গত রোববার রাত থেকে ভারী বর্ষণের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সোমবার দুপুর থেকে জেলা সদর,লামা ও আলীকদম উপজেলার নিন্মাঞ্চল সমুহ প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকা গুলোর মধ্যে রয়েছে লামা পৌরসভার নয়া পাড়া, উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকা সমুহ, লামা বাজারের একাংশ, নুনারবিল, লামা বাস স্ট্যান্ড, লামা থানা এলাকা, লাইনঝিরি. ছাগলখাইয়া, ফকির পাড়া, কলিঙ্গারবিল, হাসপাতাল পাড়া, শিলেরতুয়া ও চেয়ারম্যান পাড়া।
লামা-আলীকদম সড়কের লাইনঝিরি ও শিলেরতুয়া পয়েন্টে পাহাড়ি ঢলের পানিতে আলীকদমের সাথে চকরিয়া ও লামার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। লামা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হোসেন বাদশা জানিয়েছেন,পাহাড়ি ঢলের পানিতে তার এলাকা পুরোটায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.জালাল উদ্দিন জানান, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় তার এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু জানিয়েছেন, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পাহাড়ের পাদদেশ ও নিন্মাঞ্চলে ঝুকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।
এছাড়া স্কুল ও মাদ্রাসা গুলোতে দূর্যোগ কবলিত মানুষদের নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। লামা পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন,পাহাড়ি ঢলে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে পরিস্থিতি সার্বক্ষনিক তদারকি করার জন্য কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকাযোগে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রিত বন্যার্তদের শুকনো খাবার বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
বান্দরবান জেলা সদরের সাথে রুমা উপজেলার সড়ক যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সোমবার সকালে প্রবল বর্ষণের সময় সড়কের ওয়াইজংশন এলাকায় বড় একটি পাহাড় ধসে পড়লে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ সড়ক যোগাযোগ চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ওয়াইজংশন থেকে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে দুটি জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে সড়ক যোগাযোগ চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জেলার সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীতে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।