শিপু ফরাজী, চরফ্যাসন প্রতিনিধি :: বুড়াগৌড়াঙ্গ খালের উপর ব্রীজ না থাকায় ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার নজরুল নগর ইউনিয়নের চর আর কলমী এবং রসুলপুর ইউনিয়নের ভাসানচর গ্রামের কয়েকশ শিক্ষার্থী লেখাপড়ার সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছে। যুগযুগ ধরে এই দু’টি গ্রামের শিশুরা লেখাপড়ার সুযোগ ছাড়াই বেড়ে উঠেছে।
গ্রামের পাশে প্রাথমিক ও নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও পথের মাঝে দেড়শ ফুট দীর্ঘ বুড়াগৌড়াঙ্গ খালের উপর বিশাল সাঁকো পাড়াপাড়ের ঝুঁকি শিশুদের স্কুল বিমুখ রাখছে। সম্প্রতি এই সাঁকো থেকে ফরাজিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষার্থী সুরাইয়া সাঁকো থেকে খালে পড়ে মারা যায়।
উপজেলার ভাসানচর ও চর আর কলমী গ্রাম দু’টি শশীভূষণ থানার রসূলপুর ও দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের অংশ। রসূলপুর ইউনিয়নের ভাসানচর গ্রামের হাজিরহাট বাজারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রসূলপুর নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। খুব কাছের এই বিদ্যালয়গুলো ভাসানচর এবং আর কলমী গ্রামের শিশুদের জন্য দূর্গম করে দিয়েছে বুড়াগৌরাঙ্গখাল।
খালের উপর দেড়শ ফুট দীর্ঘ সাঁকো অতিক্রম করেই শিশুদের স্কুলে আসতে হয়। বিশাল এই সাঁকো পাড়াপাড়ে প্রায়ই ঘটে বিপত্তি। রসূলপুর নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, ভাসানচর গ্রামের অর্ধেক এবং চর আর কমলী গ্রামের পুরোটাই বুড়াগৌড়াঙ্গ খালের ওপারে। দুটি গ্রামের যেখানে ভোটার সংখ্যা ৮ হাজার এবং জনসংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। প্রাথমিক ও নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এক হাজার।
কিন্ত শিক্ষার্থীদের খুব কম অংশ স্কুলে আসে। শিক্ষার্থীদের না আসার কারণ বিশাল খালের উপর ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো। এই সাঁকো থেকে খালে পড়েই সুরাইয়ার মূত্যু হয়েছে।
হাজিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদাউস বেগম জানান, স্কুলে আসার পথে সাঁকো থেকে খালে পড়ে সুরাইয়ার মূত্যুর পর আতংকে ভাসানচর ও চর আর কলমী গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী ২ শতাধিক শিশু শিক্ষার্থীর স্কুলে আসার বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দু’টি গ্রামের কয়েকশ শিশু শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত থেকেই বেড়ে উঠবে।
রসূলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জানান, বুড়াগৌড়াঙ্গ খালের সাঁকোর স্থলে ব্রীজ নির্মাণের জন্য সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপিকে অবহিত করা হয়েছে।
চরফ্যাসন উপজেলা প্রকৌশলী ( এলজিইডি) মো. মোশারেফ হোসেন জানান, বুড়াগৌড়াঙ্গ খালের উপর ব্রীজ নির্মানের জন্য উধর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। যাতে খুব শিগ্রিই সাঁকো এলাকায় ব্রীজ নির্মান করা হয়।