এস এম শফিকুল ইসলাম।

জয়পুরহাট: জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু এমপি ও সাধারন সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলীর বিরুদ্ধে সংগঠনটির গঠনতন্ত্র লংঘন ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে কমিটির ৪৪ জন সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব করেছেন। অন্যদিকে অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এই অগঠনতান্ত্রিক অনাস্থা প্রস্তাব ও অভিযোগ করা হয়েছে বলে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পাল্টা অভিযোগ করেছেন।

গত সোমবার বিকেলে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে জয়পুরহাট মুক্ত দিবস ও বিজয় দিবসের প্রস্তুতি উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় ৪৪ জন সদস্যের স্বাক্ষর করা অনাস্থা প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়।

দলীয় সূত্র জানা গেছে, অভিযোগ আকারে লেখা ‘রিকুইজিশন পত্রটি’ জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান টিটো’র মাধ্যমে তা সাধারন সম্পাদকের নিকট পাঠানো হয়েছে। রিকুইজিশন পত্রের মাধ্যমে মূলত ওই অনাস্থা প্রস্তাবে জেলা আওয়ামীলীগের ৭১ জন সদস্যের মধ্যে ৪৪ জনের স্বাক্ষর দেখা যায়।

জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোল্লা শামছুল আলম স্বাক্ষরিত ওই রিকুইজিশন পত্রে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রতারনা ও জালিয়াতিসহ দ্বিমত পোষনকারী দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে দূর্ব্যবহার, হুমকি-ধামকি প্রদানের অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ছাড়া সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, তারা জামায়াত-বিএনপি পন্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের টানা হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দান করাসহ তাদের রাজনৈতিকভাবে পূনর্বাসন করেছেন। এ সব কারনে জেলা আওয়ামীলীগের সংক্ষুব্ধ ৪৪ জন সদস্য স্বাক্ষরিত রিকুইজিশন পত্র দাখিলের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে ওই অনাস্থা প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান জেলা আওয়ামীলীগের আরেক সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট মোমিন আহম্মেদ চৌধূরী।

তবে জয়পুরহাট মুক্ত দিবস ও বিজয় দিবসের এই আলোচনা সভায় এই ধরনের ঘটনা ঐক্যবদ্ধ জেলা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলে জানান জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলী ও যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শেখর মজুমদার। তারা অরো বলেন সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও গঠনতন্ত্রের নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সহ-সভাপতি মোল্লা শামছুল আলমের সভাপতিত্বে তারা যে সভা আহবান করেছেন তা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল।

এ ছাড়া জেলা আওয়ামীলীগের প্যাডে যে সব সদস্যদের নামের পাশে কি কারনে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে স্বাক্ষরকারীদের অনেকেই তা জানেন না। আবার কোন কোন সদস্যদের নামের পাশে ওই সদস্য স্বাক্ষর না করলেও কেউ কেউ প্রক্সি স্বাক্ষরও করেছেন। অনাস্থার ওই অভিযোগ পত্রটি  সাদা কাগজে কম্পিউটারে টাইপ করা আর  আলাদা করে জেলা আওয়ামীলীগের প্যাডে সদস্যদের স্বাড়্গরের বিষয়টি রহস্যজনক।

এই রিকুইজিশন পত্রটি ও আলাদা ভাবে জেলা আওয়ামীলীগের প্যাডে বিভিন্ন স্তরের সদস্যদের স্বাক্ষরের বিষয়টি বিভিন্ন সূত্রে জানলেও এখনো তিনি তা হাতে পাননি জানিয়ে সাধারন সম্পাদক বলেন, বিষয়টি দেখার পর আরো বিস্তারিত জানা গেলে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here