অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে : বর্তমান ডিজিটাল যুগে পাঠশালার পাঠদান চিন্তা করা না গেলেও বাস্তবে বরিশালের আগৈলঝাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমনি একটি পাঠশালায় পাঠদান করা হচ্ছে। উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের রাখাল রায়ের ছেলে রমণীকান্ত বেপারী (৫৫) সংসারে অভাব অনটন থাকলেও সমাজের অসহায় শিশুদের শিক্ষাদানের লক্ষে গত ৬ বছর ধরে উপজেলার রাংতা গ্রামের রাস্তার পাশে অবস্থিত রাংতা দুর্গামন্দিরের সামনের চালাঘরে একটি পাঠশালা প্রতিষ্ঠা করেন।

রমণীকান্ত বেপারী উচ্চশিক্ষিত না হয়েও সমাজের দরিদ্র ও অসহায় শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন।

পাঠশালায় বর্তমান প্রজন্মের ৩ থেকে ৭ বছর বয়সের ৪০ জন শিশুকে পাঠদান করানো হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১টা পর্যন্ত এখানে হাতেখড়ি থেকে ১মশ্রেণী পর্যন্ত শিশুদের পড়ানো হয়।

পাঠশালা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার শিশুদের শিৰাদানে নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে পাঠশালাটি আজ এলাকাবাসীর স্বপ্নপূরণে সৰম হয়েছে। এলাকার দরিদ্র, অসহায়, নিরক্ষর, অর্ধশিক্ষিত, অভিভাবকদের অনুরোধে তাদের ছেলেমেয়ে যাদের স্কুলে ভর্তির বয়স এখনও হয়ে ওঠেনি তাদেরই রমণীকান্তর পাঠশালায় লেখাপড়া করানো হয়।

সভ্যতার ক্রমবিকাশের ফলে বর্তমান প্রজন্মের কাছে পাঠশালা কি জিনিস বা সেখানে কি হয় তাদের ধারণা নেই। পাঠশালাটিতে শিশুদের বছরে দুবার পরীৰা নেয়া হয়।

শিক্ষক রমণীকান্ত বেপারী জানান, তিনি স্বল্পশিৰিত হলেও শিক্ষার প্রসার বিস্তারের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। আজীবন কাজ করে যাবার প্রত্যাশাও তিনি জানান। তার এই পাঠশালায় শিশুদের অভিভাবকরা ন্যুণতম সম্মাণী হিসেবে সামান্য কিছু টাকা দেন।

এই পাঠশালাটিতে ক্লাশ শুর্বর পূর্বে জাতীয় সঙ্গীতও পরিবেশন করা হয়। ওই এলাকার শিশু ছাত্র-ছাত্রী ও তার অভিভাবকদের কাছে রমণীকান্ত একজন প্রিয়মুখ। পাঠশালার মাধ্যমে তার পরিচিতি রাংতা গ্রামসহ আশপাশের দুচার গ্রামের মানুষের কাছে নিবেদিত মুখ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

রমণীকান্ত বেপারীর প্রত্যাশা পাঠশালায় শিক্ষাদানের মাধ্যমে মৃত্যুর পরেও যেন মানুষ তাকে মনে রাখে।

 

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here