ঋণ
-রোকেয়া ইসলাম
প্রায় শেষ বর্ষার কৃষ্ণ গহ্বর অন্ধকারে হায়েনা উদ্ধত বুট পায়ে
এজিদ উত্তরসূরীরা ঘন ছায়ায় মৃত্যু সেজে এসেছিল বত্রিশ নম্বরের সিঁড়িতে;
সেদিনের সেই গভীর রাতটা কেমন ছিল?
অনেক খুন তাই সিমেন্টের ফ্লোর উষ্ণ;
সে ম্যালা প্রশ্ন…
যেখানে আমার নীলাভ আকাশ দৃঢ় হিমালয়, অথই সমুদ্র প্রদীপ্ত সূর্য,
অবারিত ফসলের সবুজ মাঠ, অগণন দোয়েল সুর, আম-জনতার বিশ্বাস, ভালবাসা আর পিতার রক্ত স্রোত একাকার;
এসব জেনে আর কি দরকার?!
পনেরোই আগষ্ট ভোরের বড্ড একা হয়ে যাওয়া, শ্রাবণ ভেজা বেহালায় বেহাগ অনেকটাই বেসুরো
প্রভাত সূর্য আরো রক্তিম পিতার শুদ্ধ রক্তে নেয়ে বাতাসে অনন্ত বিরহ বিষন্ন গীতি
রেডিওতে রুটিনের তারবার্তা, অভ্যুত্থানের এই এক রীতি…
দুঃখী মানুষের শোষিত পক্ষের খাঁটি মানুষটি আর নেই
সমাধি সে অবধি ঠিকানা, এই গ্রহ পিতৃহারা,
আত্মভোলা বাঙালী- স্তম্ভিত মাটি, বায়ু, বঙ্গপোসাগর;
ওনাকে কই পাই?
মেঘে ঢাকা দৃষ্টি সীমানা আকুল অশ্রুতে ঝাপসা হয়ে পাথর
সময়, কে তোমার পক্ষ?
সেনা ছাউনির ডিভোর্সি নাম পাওয়া যায়
বড়জোর মায়ের দ্বিতীয় স্বামী
বাবা নেই, ডাক নেই, কেউ নেই- সমকক্ষ…
স্মৃতির মিনার আজও ভালবাসার অবিরাম নুন
অবনত তোমার কাছে
জনক তুমিই স্বাধীনতা
আমার হাজার বছরের ডি.এন.এ রিপোর্টে তোমার খুন…
তবু রয়ে যায় অপরিশোধ বকেয়া জন্ম ঋণ
সেই কালো রাতটিই অবয়ব, বেঁচে থাকার সংশ্রব
স্পন্দিত বুকে এখানেই থামতে চাই
টুঙ্গিপাড়া বাস ষ্টেশন, আমাকে নামিয়ে দিন…