অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন
পুরো বিশ্ব আজ থমকে আছে ছোট্ট একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাসের কারণে। যা করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত। চারদিকে শুধু মৃত্যু আর লাশের মিছিল। নেই কোন কর্ম কোলাহল। পুরো বিশ্ব আজ অচল। কিন্তু এসবের মধ্যেও থেমে নেই শিক্ষাকার্যক্রম। অনলাইনে চলছে ক্লাস ও পরীক্ষা। ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই চালিয়ে নেয়া হচ্ছে শিক্ষাকার্যক্রম। অনলাইনে ক্লাস নেয়ার পাশাপাশি পরীক্ষা নেয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
করোনা সংকটকালীন সময়ে অনলাইন পরীক্ষার গুরুত্ব, সুবিধা ও প্রয়োজনীয়তাসহ নানা বিষয় নিয়ে ইউনাইটেড নিউজের সাথে কথা বলেছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি ইংরেজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন।  কথোপকথনে ছিলেন ইউনাইটেড নিউজ প্রতিনিধি মোঃ শাহীন
.
.
ইউনাইটেড নিউজঃ আসসালামু ওয়ালাইকুম, স্যার। কেমন আছেন?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আপনি কেমন আছেন?
.
ইউনাইটেড নিউজঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। স্যার, আমরা জানতে পেরেছি এই বিশ্ব সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পরীক্ষায় বসতে সম্মত হয়েছে। এ বিষয়ে কি বলবেন?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ বর্তমানে করোনা ভাইরাস বিশ্ব সংকটে পরিনত হয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু এর মধ্যেও শিক্ষার্থীরা যাতে সেশনজটে না পড়ে সেজন্য আমরা অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেছি। হয়তো প্রথম দিকে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটু ভুল বুঝাবুঝি ও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছিল।পরবর্তীতে সবকিছু ঠিক হয়েছে।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ ছাত্র- ছাত্রীরা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে আগ্রহী কিনা?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ দেখুন, ছাত্র ছাত্রীদের কল্যানের কথা চিন্তা করেই অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। তাদের জীবন থেকে যাতে মূল্যবান সময় নষ্ট না হয়, নির্ধারিত সময়েই যাতে তাদের কোর্স সম্পন্ন করতে পারে। সেজন্যই অনলাইন পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। ছাত্র ছাত্রীরাও আমাদের সাথে একমত হয়েছে এবং তারা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করছে।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ বর্তমান আপদকালীন সময়ে হয়তো অনেকই আর্থিক সংকটে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি দিতে সমস্যা থাকলে তার সমাধান কি?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ  এ সময় শিক্ষার্থীদের আর্থিক সংকটে থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে আমাদের ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিসের চেয়ারম্যান শামীম হায়দার পাটোয়ারী স্যার, এ ব্যাপারে যথেষ্ট মানবিক। শামীম হায়দার পাটোয়ারী স্যার বলেন- যাদের পুরো সেশন ফি পরিশোধ করার ক্ষমতা আছে, তারা পুরোটা পরিশোধ করবে। যাদের অর্ধেক দেয়ার সামর্থ্য আছে, তারা অর্ধেক পরিশোধ করবে। যাদের এখন একেবারেই টিউশন ফি দেয়ার সামর্থ্য নেই। তারা ইমেইলের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে কাউকে টিউশন ফির জন্য কোন চাপ দেয়া হবে না। পরীক্ষায় কোন বাধা দেয়া হবে না। সবাই পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ ইউজিসি অনলাইন পরীক্ষার ব্যাপারে কি ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ ইউজিসি সব সময়ই পজিটিভ নির্দেশনা দিয়েছেন। তারা চান না শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে মূল্যবান সময় হারিয়ে যাক। তারা যথেষ্ট নমনীয় হয়ে পরীক্ষা নিতে বলছেন। যাতে কেউ বৈসম্যের স্বীকার না হয়।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ পরীক্ষার পদ্ধতি কেমন হতে পারে?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ যেহেতু আমাদের পঞ্চাশ নম্বরের চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়। এক্ষেত্রে আমরা ৩০ নম্বরের এ্যাসাইনমেন্ট ও ২০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নিব। এতে শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট নমনীয়তার সাথে পরীক্ষা নেয়া হবে।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ অনেকে গ্রামের বাড়িতে আছে। তাদের হয়তো নেটওয়ার্কের সমস্যা থাকতে পারে। তারা কিভাবে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ আমরা সাধারণত জুম এ্যাপের মাধ্যমে পরীক্ষা নিব। তবে মেসেঞ্জারেও পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকবে। আর যারা নেটওয়ার্কের বাহিরে থাকবে তারা সেলফোনে কল করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে। পরবর্তীতে নেটওয়ার্কের আওতায় এসে এ্যাসাইনমেন্ট জমা দিবে। এ্যাসাইনমেন্ট ইমেইলের মাধ্যমে জমা করতে পারবে। যারা ইমেইলে দিতে পারবে না তারা মেসেঞ্জারে জমা দিবে।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ যারা পরীক্ষায় একেবারেই অংশ গ্রহণ করতে পারবে না। তাদের জন্য কি ধরনের ব্যবস্থা থাকবে?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ আশা করি সবাই পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে। তারপরও যারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। তারা পরবর্তীতে এ পরীক্ষাগুলো কোন রকম আর্থিক জরিমানা ছাড়াই দিতে পারবে।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ পরীক্ষার্থীদের জন্য আপনাদের বার্তা কি?
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য আমাদের বার্তা থাকবে তোমারা সবাই পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবে। শিক্ষাকরা তোমাদেরকে যথেষ্ট সহায়তা করবেন। আমরা যথেষ্ট মানবিক ও নমনীয়। নম্বর দিতে কোন কার্পণ্য করা হবে না। সবাইকে গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। কেউ যাতে বৈসম্যের স্বীকার না হয়।
.
ইউনাইটেড নিউজঃ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, স্যার।
প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেনঃ ইউনাইটেড নিউজকেও ধন্যবাদ।
Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here