চার বছরেও দেয়া হয়নি পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ

রওশন আলম পাপুল, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: পল্লী বিদ্যুতে আবেদনের প্রায় চার বছর পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সাঁওতালপল্লী মাদারপুর ও জয়পুর গ্রামের আটটি বাড়ী, একটি বিদ্যালয় ও দুইটি গির্জায় বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়নি। ওয়্যারিং করে রাখলেও একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন না করায় ও মিটার না লাগানোয় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না এসব স্থাপনায়।

সাঁওতালরা জানান, ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি গোবিন্দগঞ্জের তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সুপারিশপত্রসহ ১০০টি বাড়ী, একটি বিদ্যালয় ও দুইটি গির্জায় বিদ্যুৎ সংযোগ চেয়ে সদর উপজেলার তুলসীঘাটে গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) বরাবর আবেদন করা হয়। কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ওই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পুনরায় আবেদন করা হয়।

এরপর বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের জন্য নকশা করা হয় ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল। পরে ২০১৭ সালের প্রথমের দিকে টাকা জমা দেওয়া হলে সর্বশেষ এই বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এরপরও বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত হয় আটটি বাড়ী, একটি বিদ্যালয় ও দুইটি গির্জা। বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি মাদারপুর গ্রামের শিবু সরেন, মন্টু মার্ডি, জিতু মার্ডির বাড়ী, শ্যামল মঙ্গল রমেশ স্মৃতি বিদ্যা নিকেতন ও মাদারপুরের দুইটি গির্জা এবং জয়পুর গ্রামের মিকাই মুরমু, ল্যালন মুরমু, মাইকেল কিসকু, কমল মুরমু ও লুকাস মুরমুর বাড়ী।

সোমবার সকালে গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার দূরে সাঁওতালপল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, মাদারপুর মিশনের সামনের বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে দক্ষিণ দিকের বৈদ্যুতিক খুঁটির দূরত্ব অনেকটা বেশি। যে কোন সময় তার ছিরে গেলে অসাবধানতাবশত প্র্রানহানি ঘটতে পারে। এই দুই খুঁটির মাঝামাঝি আরেকটি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন না করায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছেন না শিবু সরেন, মন্টু মার্ডি ও জিতু মার্ডি। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য স্থাপনাগুলো ওয়্যারিং করে রাখা হয়েছে। এখন শুধু মিটার বসিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার অপেক্ষা মাত্র।

মন্টু মার্ডি ও জিতু মার্ডি বলেন, এই তিন পরিবারের বাড়ী সংলগ্ন আরেকটি বিদ্যুতের খুঁটির প্রয়োজন থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। শুধু এ কারণেই গেল ফেব্রুয়ারি মাসে অন্যান্য বাড়ীতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় আমরা বিদ্যুৎ পাইনি। তখন চারদিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এজন্য মার্চ মাসে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদনও করি। কিন্তু কেউ কোন কাজ করছে না। মিকাই মুরমু বলেন, বাড়ী ওয়্যারিং করে রাখলেও শুধু মিটার না লাগানোর কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছি না।

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গোবিন্দগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আব্দুল কাদের বলেন, ওই দুই গ্রামে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আসা হবে। আমাদের মিটারের স্বল্পতা আছে। তিনি এসে প্রতিবেদন জমা দিলে সমস্যার সমাধান করে খুব দ্রুতই ওইসব স্থাপনায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here