ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় দলিল লেখক সমিতির নামে অবৈধ সিন্ডিকেট গঠন করে কৃষক বা জমির মালিকদের কাছ থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজীর সাথে জড়িতদের নাম ঠিকানা সংম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার ঝিনাইদহের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (সি.জে.এম) আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।

আদালতের ০৩/১৭ নং মিস কেসের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে কয়েকটি দৈনিক সংবাদপত্রে ঝিনাইদহ জেলার সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসগুলোতে দলিল লেখক সমিতির নামে সিন্ডিকেট গঠন করে দাতা গ্রহীতাদের জিম্মি করে অবৈধ ভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সমিতি নামধারী চাঁদাবাজদের খপ্পরে পড়ে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সরকারী একটি দপ্তরে সেবা নিতে এসে সেই দপ্তরের কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় কোন সমিতির নামে চাঁদাবাজী আইনের চরম লংঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আদালতের আদেশে বলা হয়েছে এ রূপ চাঁদাবাজীর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা আবশ্যক। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৮৯৮ এর ২৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সংশ্লিষ্ট সাব রেজিষ্টারকে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে যে, তার এখতিয়ারাধীন এলাকায় এ রূপ চাঁদাবাজীর সাথে যারা সম্পৃক্ত আছে তদন্ত করে তাদের নাম ঠিকানা সংম্বলিত প্রতিবেদন আগামী ১৪ ফেব্রয়ারী তারিখে ঝিনাইদহের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট (সি.জে.এম) আদালতে পেশকরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদেশের কপি ঝিনাইদহ জেলা রেজিষ্টারসহ ৬ উপজেলার সাব-রেজিষ্টারদের কাছে প্রেরন করা হয়েছে।

জনস্বার্থে দেওয়া আদালতের এই আদেশের ফলে গ্রামের নিরীহ কৃষকরা গলাকাটা সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা পাবে। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সভাপতি আক্তার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আলম, শৈলকুপায় দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নান্নু মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মনিরম্নল ইসলাম, হরিণাকুন্ডুতে সভাপতি ওয়াজেদ আলী ও সম্পাদক বিশারত আলী, মহেশপুর একতা দলিল লেখক সমিতি নামে সভাপতি জাকির হোসেন ও সম্পাদক তাজুল ইসলাম, কালীগঞ্জে সভাপতি মোঃ আব্দুল হক ও সাধারণ সম্পাদক নাছির চৌধূরী, কোটচাঁদপুরে সভাপতি ইসমাইল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার সিন্ডিকেট গঠন করে জোরপুর্বক চাঁদবাজী করছেন বলে পত্রিকার খবর বের হয়।

জানা গেছে, দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারকে পৌরসভা এলাকায় প্রতি লাখে সাড়ে ১১ হাজার ও পৌরসভার বাইরে সাড়ে ৯ হাজার টাকা করে ফি দিতে হয়। কিন্তু বেআইনী ভাবে গঠিত এই সমিতি সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে পৌরসভা এলাকায় প্রতি লাখে ১৬ হাজার ও ইউনিয়নে নিচ্ছে ১৫ হাজার করে আদায় করছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here