শিপুফরাজী, চরফ্যাসন (ভোলা) প্রতিনিধি :: চরফ্যাসনের লক্ষাধিক চরবাসীর জন্য কোন নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নেই। তাই ঘুর্ণিঝড় ‘ফনী’ মোকাবেলায় উপকূলবাসীকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হলেও বিচ্ছিন্ন দ্বীপচরগুলোর লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে পারছে না।
স্থানীয়রা জানায়, চরফ্যাসন উপজেলার মেঘনা ও সাগর মোহনায় জেগে ওঠা, ঢালচর, কুকুরি মুকুরি, চরপাতিলা, চরহাসানসহ বেশ কয়েকটি জনবসতিপূর্ণ দ্বীপে বিশেষ কোন আশ্রয়কেন্দ্র নেই বললেই চলে। ওইসব চরাঞ্চলে প্রায় লক্ষাধিক শিশু নারী পুরুষ চরম আশ্রয়হীন অবস্থায় রয়েছে।
তারা জানায়, ঢালচরে একটি মাত্র আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। সেটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নেই। কুকুরি-মুকুরিতে একটি মাত্র পাকা স্কুল দালান ও চরপাতিলায় একটি ঝুকিপূর্ণ আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে।
এদিকে ইলিশের মৌসুম হওয়ায় ওইসব চরাগুলোতে এখন স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ অবস্থান করছে। এত মানুষের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় তারা ঝড় জলোচ্ছ্বাসে চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
চরফ্যাসন উপজেলা ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সহকারী পরিচালক মোকাম্মেল হক জানান, চরফ্যাসন উপজেলায় মোট ১১১টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি ব্যবহারের উপযোগী নয়। এ চাড়া ২৩টি মাটির কেল্লার মধ্যে মাত্র ১০টি কেল্লায় বিপদকালীন আশ্রয় নেয়া যায়।
সাগর মোহনার ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেছেন, বৃহষ্পতিবার থেকে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। সব ধরণের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপ থেকে করো সরে যাওয়ার উপায় নেই। শুক্রবার দুপুরে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট উচ্চতার জোয়ারে ঢালচর প্লাবিত হয়েছে। রাতের জায়ার আরো বেশী হতে পারে। এই দ্বীপ ইউনিয়নের ১৫ হাজার মানুষের জন্য মাত্র একটি আশ্রয়কেন্দ্র আছে। যাতে সর্বোচ্চ ৫শ’ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। ফলে ঘূর্ণিঝড় ‘ফনী’ ধেয়ে আসার খবরে দ্বীপের মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরেছে।
নৌযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরা অপর ইউনিয়ন কুকরী-মুকরী চেয়ারম্যান হাসেম মহাজন জানান, এই ইউনিয়নের ১৭ হাজার মানুষের জন্য মাত্র ৮টি স্কুল কাম আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। যেগুলোতে ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। দিনের জোয়ারে দ্বীপের উপরিভাগ স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হওয়ায় রাত এগিয়ে আসার সাথে বাড়ছে আতংক। তেতুলিয়া পাড়ের মুজিব নগর ইউনিয়নের ১৮ হাজার মানুষের জন্য আছে ৫টি স্কুল কাম আশ্রয় কেন্দ্র।
মুজিব নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল অদুদ জানান, ঘুর্ণিঝড় ‘ফনী’ ধেয়ে আসার খবরে দ্বীপের মানুষ সরে যেতে শুরু করেছে।